ছুটির দিনে
বর্ষায় মাধবকুণ্ড ঝর্ণা, খরচ ৯০০ টাকা
মাধবকুণ্ড ঝর্ণা, যা বাংলাদেশের সুউচ্চ জলপ্রপাত হিসেবে পরিচিত। মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত। মাধবকুণ্ড যাওয়ার উত্তম সময় হচ্ছে বর্ষাকাল। এ সময় ঝর্ণা পানিতে পূর্ণ থাকে। শীতকালেও এর সৌন্দর্যের কমতি হয় না। একসময় পর্যটকদের কাছে প্রাকৃতিক জলপ্রপাত মানেই ছিল মাধবকুণ্ড। এখন দেশের ভেতরে আরো অনেক ঝর্ণার সন্ধান মিলেছে। তবে এখনো জলপ্রপাত অনুরাগী পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ মাধবকুণ্ড ঝর্ণা। পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে দেশে-বিদেশে পরিচিত এই স্থানটিতে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের রেস্টহাউস ও রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগে পুরো এলাকাটিকে ঘিরে তৈরি করা হচ্ছে মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক। আপনি চাইলেই দেখে আসতে পারেন মাধবকুণ্ড ঝর্ণা। আর ভাবছেন খরচ কত, মাত্র ৯০০ টাকা।
যে পাহাড়টির গা বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে, এ পাহাড়টি সম্পূর্ণ পাথরের, যা পাথারিয়া পাহাড় নামে পরিচিত। এর বৃহৎ অংশজুড়ে রয়েছে ছড়া। এই পাহাড়ের ওপর দিয়ে গঙ্গামারাছড়া বহমান। এই ছড়া মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত হয়ে নিচে পড়ে হয়েছে মাধবছড়া। অর্থাৎ গঙ্গামারাছড়া হয়ে বয়ে আসা জলধারা প্রায় ১৬২ ফুট উঁচু থেকে নিচে পড়ে মাধবছড়া হয়ে প্রবহমান। সাধারণত একটি মূল ধারায় পানি সব সময়ই পড়তে থাকে, বর্ষাকাল এলে মূল ধারার পাশেই আরেকটা ছোট ধারা তৈরি হয় এবং ভরা বর্ষায় দুটো ধারাই মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় পানির তীব্র তোড়ে। জলের এই বিপুল ধারা পড়তে পড়তে নিচে সৃষ্টি হয়েছে বিরাট কুণ্ডের। এই মাধবছড়ার পানি পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হতে হতে গিয়ে মিশেছে হাকালুকি হাওরে। মাধবকুণ্ড ঝর্ণা থেকে ১৫-২০ মিনিটের হাঁটা দূরত্বে রয়েছে আরেকটি ঝর্ণা, যা পরিকুণ্ড ঝর্ণা নামে পরিচিত।
যাবেন কীভাবে
ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ‘ঢাকা-বিয়ানীবাজার’ রুটের অনেক ভালো মানের চেয়ারকোচ বাস আছে। এদের মধ্যে আছে ‘রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস’, ‘শ্যামলী’। তা ছাড়া ‘এনা পরিবহন’-এর বাসও আসে। ভাড়া নেবে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। আপনি এভাবে সরাসরি বাসে এলে বড়লেখার একটু আগে ‘কাঁঠালতলী’ নামক জায়গায় নামবেন। এখান থেকে মাধবকুণ্ড বেশি দূর নয়। তবে আপনাকে মাধবকুণ্ড চূড়ার কাছে যেতে হলে এখান থেকে অবশ্যই সিএনজি বা রিকশা নিতে হবে। জনপ্রতি গেলে সিএনজিতে ভাড়া পড়বে ১৫-২০ টাকা, আর আপনি পুরো ভাড়া করলে ১০০ টাকার কাছাকাছি নেবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই আগে থেকে দরদাম করে নেবেন। তা ছাড়া আপনি চাইলে কমলাপুর থেকে ট্রেনেও আসতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনাকে ঢাকা-সিলেটের আন্তনগর ট্রেনে উঠতে হবে এবং কুলাউড়া নামক স্টেশনে নামতে হবে। ট্রেনগুলোর মধ্যে আছে জয়ন্তিকা, পারাবত, উপবন। ‘উপবন এক্সপ্রেস’ কমলাপুর থেকে রাত ১০টায় ছাড়ে আর কুলাউড়ায় এসে পৌঁছায় ভোর ৫টায়। ভাড়া নেবে ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা। কুলাউড়া থেকে মাধবকুণ্ডের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার, আপনি এখান থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে সরাসরি মাধবকুণ্ড যেতে পারেন। ভাড়া পড়বে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।