ঘোরাঘুরি
১১৫০ টাকায় ঘুরে আসুন গৌরারং জমিদারবাড়িতে...
শতক আসে শতক যায়, কিন্তু জমিদারবাড়ি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে স্যাঁতসেঁতে শ্যাওলা মেখে, কাল থেকে কালান্তরে গন্ধ ছড়িয়ে। জমিদারবাড়ির ঝরাপাতা, পুরোনো ধুলো, রহস্যমাখা হাওয়া মাড়িয়ে ছুটে চলে জীবনধারা। মহাকাল ছিন্ন করে বের হওয়া মানুষটা খুঁজে বেড়ায় অতীত ঐতিহ্যের । আর আপনি যদি চান অতীত ঐতিহ্যকে বহন করে এমন কোনো রাজবাড়ী দেখতে, তাহলে আপনাকে যেতে হবে সিলেটের সুনামগঞ্জের গৌরারং জমিদারবাড়িতে। আর খরচের কথা ভাবছেন, মাত্র এক হাজার ১৫০ টাকা।
যা দেখবেন
বাড়িটির সামনে দিয়ে সাবলীল গতিতে প্রবাহিত হচ্ছে নদীর সবুজ ও স্বচ্ছ জলধারা। পেছনে সুবিশাল হাওর। হেমন্তে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ আর সবুজ। দখিনা বাতাসে এক অন্য রকম ভালো লাগার অনুভূতিতে বিমুগ্ধ হন সবাই। বর্ষায় থৈথৈ জলের মধ্যে মনে হয় এ যেন সমুদ্রে ভাসমান কোনো রাজপ্রাসাদ। অনুপম নির্মাণশৈলীর কারণে এ জমিদারবাড়িকে হাওর রাজ্যের রাজমহল হিসেবেই আখ্যায়িত করেন স্থানীয়রা। জমিদারবাড়ির রংমহলের দেয়ালে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় সৃষ্ট নর-নারী ও লতাপাতার ছবি দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে। জমিদারবাড়ির সামনের একপাশে রয়েছে দীঘি। দীঘিতে জমিদারবাড়ির নারীদের যাওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছিল জলবারান্দা। দেয়ালঘেরা এ জলবারান্দা দিয়েই লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে গোসল করতেন জমিদারবাড়ির নারীরা। প্রায় ১০০ বছর আগে ভূমিকম্পে জমিদারবাড়িটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে সময় ভূমিকম্পে দেয়ালচাপা পড়ে জমিদারের এক ভাই মারা যান। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী বাড়ির মূল ফটকসহ বেশ কিছু স্থাপনা ধ্বংস করে দেয়। গৌরারং জমিদার বংশের আদিপুরুষ নিধিরাম সুরমা নদীর পশ্চিম দিকে গৌরারং গ্রামে প্রাচীন ও আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয়ে তৈরি করেন সুরম্য জমিদার প্রাসাদ। এই বংশের নগেন্দ্র চৌধুরী সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁর ভূমিকার জন্য স্মরণীয় হয়ে আছে। গৌরারাংয়ের জমিদার প্রাসাদে দেখার মতো রংমহল, বাঁধাই করা বিরাট পুকুর ঘাট, অন্ধকূপ, যাত্রামঞ্চ।
যাবেন কীভাবে
সরাসরি ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ ৫৫০ টাকা বাস ভাড়া। এনা /শ্যামলী /মামুন বাস যায়। ট্রেনে যেতে চাইলে প্রথমে আপনাকে ঢাকা থেকে সিলেট আসতে হবে ট্রেনে, তার পর সিলেট থেকে গাড়ি করে সুনামগঞ্জ। সেখান থেকে সুনামগঞ্জ নতুন ব্রিজ। তারপর ব্রিজ থেকে সিএনজি করে জমিদারবাড়ি। ভাড়া ২৫ টাকা জনপ্রতি।