পূজার ছুটিতে
চৈতন্য মহাপ্রভুর মন্দির ঘুরে আসুন মাত্র ৭৪০ টাকায়
অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগে তৎকালীন সিলেটের গোলাব রায়ের উদ্যোগে সিলেটের দক্ষিণে চৈতন্য মহাপ্রভুর মন্দির নির্মিত হয়। এটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি ঐতিহাসিক তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর এখানে তীর্থস্থান পরিদর্শনে অসংখ্য পর্যটক আসেন। সিলেটের গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের মিশ্রপাড়া গ্রামে ভারতীয় উপমহাদেশের বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক চৈতন্য দেবের পৈতৃক নিবাস এবং এখানেই এই মন্দিরটি অবস্থিত; যা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তথা সবার কাছে তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। সাপ্তাহিক ছুটিতে মাত্র ৭৪০ টাকার বিনিময়ে সহজেই ঘুরে আসতে পারেন এই ঐতিহাসিক চৈতন্য মহাপ্রভুর মন্দির।
ইতিহাস
চৈতন্য দেবের দাদা উপেন্দ্র মিশ্রের বাড়ি ছিল ঢাকা দক্ষিণের মিশ্রপাড়ায়, যেখানে তাঁর পিতা জগন্নাথ মিশ্র ও মা শচীদেবী বিবাহ-পরবর্তী সময়ে বসবাস করতেন। বিবাহের কিছুদিন পর শচীদেবী গর্ভবতী হলে তাঁর দিদিমা স্বপ্নে দেখেন যে এই সন্তান হচ্ছেন স্বয়ং ভগবান; তবে শচীদেবীর সন্তান যেন অন্যত্র ভূমিষ্ঠ হয়। তাই তিনি জগন্নাথ মিশ্র ও শচীদেবীকে নবদ্বীপে পাঠিয়ে দেন এবং বলেন যেন তাঁর নাতি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। ফলে চৈতন্য দিদিমার কথা রক্ষার্থে ঢাকা দক্ষিণে এসেছিলেন। চৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর দিদিমার কথা রক্ষার জন্য ঢাকা দক্ষিণে আসেন এবং সেখানে দুদিন অবস্থান করেন। যদিও কেউ তথ্য-প্রমাণ দিয়ে বলতে পারেন না যে তিনি ঠিক কবে এখানে এসেছিলেন। তবে ধারণা করা হয় যে সেটি চৈত্র মাসের কোনো এক রোববার ছিল। তাই প্রতিবছর চৈত্র মাসে তাঁর আগমন উপলক্ষে এখানে উৎসবের আয়োজন করা হয়। মাসব্যাপী চলমান এই উৎসবে মেলা, সংকীর্তন, পূজা প্রভৃতির ব্যবস্থা করা হয়।
যা দেখবেন
শহুরে পথ ছেড়ে আপনি যখন ঢাকা দক্ষিণের পথে এগিয়ে যাবেন, এক স্নিগ্ধ পরিবেশ আপনাকে বরণ করে নেবে। তবে মাঝেমধ্যে বেরসিক রাস্তা আপনার বিরক্তির কারণ হতে পারে। চৈতন্য মহাপ্রভুর মন্দিরের কাছে এলেই দেখা পাবেন পুকুরের। এর একটু সামনে গেলেই দেখা পাবেন মন্দিরের। মন্দিরে প্রবেশের সময় হাতের ডান পাশে দেখা পাবেন চৈতন্য মহাপ্রভুর দিদিমার বাড়ি। প্রায় সংস্কারহীন ভগ্নপ্রায় বাড়ি। এর পর সামনে এগিয়ে গেলে দেখা পাবেন চৈতন্য মহাপ্রভুর মূল মন্দিরের। যাঁরা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য আদর্শ স্থান এটি। আপনি চাইলে আশপাশের এলাকাও ঘুরে দেখতে পারেন। খুঁজে পেতে পারেন নতুন কোনো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।
কীভাবে যাবেন
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে বাস/ ট্রেন/ বিমানযোগে প্রথমে আসতে হবে। এর পর সিলেট শহরের কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে যেতে হবে সিলেটের গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের মিশ্রপাড়া গ্রামে। এখানে ভাড়া নেবে ৫০ থেকে ১০০ টাকার ভেতর।