শীতের ছুটিতে
মুঘল আমলের নয়াবাদ মসজিদে একদিন
কান্তজিউ মন্দির থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণে কাহরোল উপজেলার ঢেঁপা নদীর পশ্চিম তীরে নয়াবাদ মসজিদটি অবস্থিত। টেরাকোটা শোভিত এই মসজিদটি অনন্য এক নিদর্শন। গঠনশৈলী দেখে ধারণা করা হয়, এটি কান্তজিউ নির্মাতাদেরই তৈরি একটি নিদর্শন। আমাদের দেশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা আমাদের অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে এখনো স্বমহিমায় নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়। প্রতিটি জেলার এসব ঐতিহাসিক স্থাপনা যেমন দেশের সৌন্দর্যের অন্যতম অনুষঙ্গ, তেমনি পর্যটকদেরও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। ঠিক তেমনি একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা নয়াবাদ মসজিদ। আসছে ছুটির দিনে ঘুরে আসতে পারেন দিনাজপুরের নয়াবাদ মসজিদ থেকে।
ইতিহাস
মসজিদের প্রবেশদ্বারের ওপর ফার্সি ভাষায় রচিত লিপি থেকে জানা যায়, সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সময় ২ জ্যৈষ্ঠ, ১২০০ বাংলা সনে (১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দ) মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। মসজিদের নির্মাণ সম্বন্ধে জনশ্রুতি অনুযায়ী আঠারো শতকের মধ্যভাগে যখন বিখ্যাত কান্তজিউ মন্দির নির্মিত হয়, তখন পশ্চিমা দেশ থেকে আগত মুসলিম স্থাপত্যকর্মীরা পার্শ্ববর্তী নয়াবাদ গ্রামে মোকাম তৈরি করেন।
যা দেখবেন
এই মসজিদটি দেখতে গেলে এখানে প্রবেশদ্বারেই আপনার চোখে পড়বে ফার্সিতে লেখা লিপি। লিপিতে লেখা রয়েছে, সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সময় ১২০০ বাংলা সনে (১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দ) নির্মিত। এই মসজিদের প্রধান আকর্ষণ মসজিদের ছাদজুড়ে বিশাল তিনটি গম্বুজ। এই গম্বুজগুলো মসজিদটির সৌন্দর্যে দিয়েছে অনন্য মাত্রা। মসজিদের চার কোণে ১২.৪৫ মিটার ও ৫.৫ মিটার আকারের চারটি অষ্টভুজ মিনারের সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এই মসজিদের দেয়ালের পুরুত্ব হলো ১.১০ মিটার। মসজিদের তিনটি প্রবেশদ্বার রয়েছে। মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণের দেয়ালে রয়েছে একটি করে জানালা আর পশ্চিম দিকে তিনটি ধনুক আকৃতির মেহরাব। যেগুলো মসজিদের পূর্ব পাশের দেয়ালে প্রবেশের তিনটি দরজা বরাবর পশ্চিম পাশের দেয়ালে তৈরি করা হয়েছে। মোট তিনটি গম্বুজের মধ্যে মাঝেরটি অন্য দুটির তুলনায় একটু বড়। সামনের দিকে নির্দিষ্ট দূরত্বে ও সমস্ত দেয়ালজুড়ে আয়তাকার ১০৯টি টেরাকোটা রয়েছে। পোড়ামাটির টেরাকোটাগুলোতে চমৎকার লতাপাতা ও ফুলের নকশা অঙ্কিত। যদিও এগুলো এখন প্রায় বিলুপ্ত।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে নাবিল পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, এস আর ট্রাভেলস, কেয়া পরিবহন, এস এ পরিবহন, শ্যামলী পরিবহনের এসি ও নন-এসি দিনাজপুরগামী বাস রয়েছে। ভাড়া ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা। দিনাজপুর শহর থেকে অটোরিকশায় সহজেই পৌঁছে যাবেন নয়াবাদ মসজিদে।