চলুন যাই নিমতলী প্রাসাদে
ঢাকার ঐতিহাসিক নিমতলী প্রাসাদের নাম এখনো লোকমুখে রয়ে গেছে। বাস্তবে প্রাসাদটি নেই। টিকে আছে কেবল প্রধান প্রবেশদ্বার। সেখানে এখন গড়ে তোলা হয়েছে এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর। সম্প্রতি দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির দ্বার। আসছে ছুটির দিনগুলোতে খুব সহজেই ঘুরে আসতে পারেন এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর থেকে।
যা দেখবেন
জাদুঘরটির নিচতলায় ডান দিকে পাশাপাশি দুটি ঘর। প্রতিটি ঘরে তিন দিকের দেয়ালে স্মারক রাখার জায়গা করা হয়েছে। আর বাঁয়ে আছে একটি ঘর। ঘরটি খুব সুন্দর করে সাজানো আছে নানা স্মারক দিয়ে। আর বাঁয়ে আছে একটি ঘর। দেউড়ি ভবনেই ছিল এশিয়াটিক সোসাইটির প্রথম কার্যালয়। নিচতলায় তাই রাখা হয়েছে ১৯৫২ সালের ৩ জানুয়ারি যাত্রা করা এশিয়াটিক সোসাইটির নানা স্মারক। আরেকটি ঘরে ডিজিটাল মনিটরে নায়েব নাজিমদের আমলে ঢাকার ইতিহাসভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র দেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। সামনেই পাবেন ওপরে ওঠার সিঁড়ি। পুরোনো সিঁড়িতে কাঠ বসিয়ে নতুনত্ব দেওয়া হয়েছে। দোতলায় একটি ঘর, দৈর্ঘ্য-প্রস্থে প্রায় সমান।
আলোকচিত্র ও তৈলচিত্র আছে বেশ কিছু। পরের বিস্ময় তৃতীয় তলার জাদুঘরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় গ্যালারি এটি। ৪৫ ফুট দৈর্ঘ্যের এই কামরায় রাখা হয়েছে মসলিন, ধাতব মুদ্রা ও তৈজসপত্র। সুপরিসর ঘরে নবাব নুসরাত জংয়ের দরবারের ত্রিমাত্রিক উপস্থাপনাও তুলে ধরা হয়েছে। যেন জীবন্ত! হঠাৎ করে দেখে মনে হবে দরবারে বসে আছেন নুসরাত জং। নবাবের হাতে হুঁকার নল। পেছনে একজন কাপড়ের পাখা নাড়িয়ে বাতাস দিচ্ছে নবাবকে। পুরো ভবনটা এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যেন দর্শনার্থীরা নবাবি আমলে ফিরে যেতে পারেন। ১৭ থেকে ১৯ শতক পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের স্মারকের দেখা পাবেন জাদুঘরে। সময়কাল ধরে ধরে সাজানো হয়েছে।ঢাকায় সুবেদারি আমলের পর আসে নবাবি আমল। নায়েব নাজিমদের নবাব নামেই ডাকা হতো।
ঢাকা নিয়াবত বলা হতো এই অঞ্চলকে। তখনকার ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য আছে। নবাবদের তালিকা আছে। তাঁদের কাজকর্মের বর্ণনা আছে। নবাবদের আওতায় ত্রিপুরা আর চট্টগ্রামও ছিল। তার বর্ণনাও দেখা গেল জাদুঘরে। আছে তখনকার দালানকোঠা, মসজিদ, ভবন সম্পর্কেও তথ্য। ঢাকার গান-বাজনা, পোশাক, খাবার নিয়েও থাকছে অনেক তথ্য। সব মিলে পাঁচটি কক্ষে পাঁচ গ্যালারি। বলে রাখা ভালো দর্শকদের জন্য প্রতি শুক্রবার ও শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। শুক্রবার দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত নামাজের বিরতি থাকবে। জাদুঘর পরিদর্শনের জন্য দর্শকদের প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা এবং ছাত্রছাত্রীদের পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে ১০ টাকা। বিদেশি দর্শকদের জন্য ২০০ টাকা।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে আপনাকে যেতে হবে এশিয়াটিক সোসাইটি প্রধান কার্যালয়ে যা নিমতলিতে অবস্থিত। মতিঝিল থেকে রিকশায় খরচ পড়বে ৬০ থেকে ৮০ টাকা।