ঈদের ছুটিতে

আল্পনা গ্রামে একদিন

Looks like you've blocked notifications!

রানি ইলা মিত্রের সাহসী সংগ্রামের সঙ্গে   জড়িয়ে আছে নাচোলের নাম। টিকইল, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ছোট্ট একটা গ্রামের নাম। টিকোইল গ্রামের প্রতিটি দেয়ালই এক একটি ক্যানভাস আর মানুষগুলো আল্পনার কারিগর।  আর এ কারণেই আল্পনা গ্রাম নামে এর পরিচিতি এখন দেশজুড়ে।

মাটির ঘরের এখানকার বাসিন্দারা নিজের মতো সাজিয়ে তুলেছে নিজেদের শৈল্পিক রাজত্ব।  এখানকার রঙের রাজত্বে সবাই রাজা।  টিকইল গ্রামের আলপনার মূল কারিগর হচ্ছেন এ গ্রামের গৃহিণী আর মেয়েরা৷  বংশ পরম্পরায় বছরের পর বছর বাড়ির দেয়ালে দেয়ালে এ ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছেন তাঁরা৷ ছুটির দিনগুলোতে ঘুরে আসতে পারেন আল্পনা গ্রাম থেকে।

যা দেখবেন-

নাচোলের আলপনা গ্রামের প্রতিটি বাড়ির দেয়ালই যেন একেকটি ক্যানভাস। মাটির তৈরি এ সব বাড়ির ভেতরের-বাইরের কোনো দেয়ালই বাদ পড়ে না তুলির আঁচর থেকে। রান্নাঘর থেকে শোবার ঘর, প্রতিটি দেয়ালই মেয়েরা ভরে ফেলেন হাতে আঁকা আলপনায়।

টিকোইলের মাটির ঘরগুলোকে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য এবং নিজেদের শিল্পীসত্ত্বার কারণেই গ্রামবাসী তাদের মাটির ঘরে আলপনা করেন। এই আল্পনা তারা আঁকেন তাদের নিজেদের তৈরি করা রং দিয়ে। এখানকার মাটির ঘরে আলপনা করার রঙের উৎসও মাটি। গৃহিণীরা আলপনা আঁকতে গিরিমাটি, চক ( খড়িমাটি), রং, তারপিন তেল ব্যবহার করত। তবে ওইসব উপকরণে আঁকা আল্পনা বেশিদিন স্থায়ী হতো না। তাই বর্তমানে শুকনা বরই চুর্ণ আঠা, গিরিমাটি, আমের পুরাতন আঁটির শাঁস চুর্ণ, চকগুঁড়া, বিভিন্ন রং, মানকচু ও কলাগাছের কস দিয়ে তৈরি রংয়ের মিশ্রণ অন্তত চার-পাঁচ দিন ভিজিয়ে রেখে আলপনা আঁকা হয়। ফলে ওই আলপনা প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় স্থায়ী হয়। তাদের মতে, এতে যেমন বাড়িঘরে পবিত্রতা আসে ঠিক তেমনি পরিবারের সবার মনে বাড়িঘরে আনন্দ লাভের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

যেভাবে যাবেন-

রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক পথে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দূরত্ব ৩১৭ কিলোমিটার এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থেকে আলপনা গ্রামের দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। ঢাকা হতে কেবল সড়ক পথেই সরাসরি চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাওয়া যায়। ট্রেন কিংবা আকাশ পথে যেতে হলে রাজশাহী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে হয়। ঢাকার কল্যাণপুর এবং গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, মডার্ন এন্টারপ্রাইজ, ন্যাশনাল ট্রাভেলসসহ বেশকিছু পরিবহনের বাস চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে নিয়মিতভাবে যাত্রা করে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর হতে ট্রেনে চড়ে নাচোল উপজেলায় যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বাস, ট্যাক্সি এবং সিএনজি ভাড়া করে আলপনা গ্রাম যাওয়া যায়।