ফিনদেশের দিনলিপি ৩

হলুদ ক্যাম্পাসে প্রথম দিন

Looks like you've blocked notifications!

বিশাল লেকচার হল। সিঁড়ির মতো করে সিটগুলো ওপরে উঠে গেছে। হলভর্তি স্টুডেন্ট। আমি বসেছি সবার ওপরের দিকে।

চারপাশে বিশাল চারটি প্রোজেক্টর স্ক্রিন। স্ক্রিনে ইউনিভার্সিটি নিয়ে বিভিন্ন ইনফরমেশন দেখানো হচ্ছে। একেবারে সামনে নিচে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে নেড়ে সেগুলো বোঝাচ্ছেন একজন প্রফেসর। প্রফেসর পুরুষ না মহিলা বুঝতে পারছি না। কণ্ঠ শুনে মনে হচ্ছে পুরুষ। কিন্তু দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছে মহিলা।

এর চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আমার আশপাশে আর কোনো এশিয়ান ছাত্র চোখে পড়ছে না। সবাই মনে হচ্ছে ফিনিশ। রুমভর্তি সাদা চামড়ার মধ্যে আমার কৃষ্ণবর্ণ রীতিমতো জ্বলজ্বল করছে।

তার চেয়েও বড় সমস্যা, লেকচার দেওয়া হচ্ছে ফিনিশে। ইংরেজিতে না। পড়াশোনা ইংরেজিতে জেনেই তো মাস্টার্স করতে এসেছি। এখন ইংরেজির তো নামগন্ধ দেখছি না। আমার ঘাম ছুটে গেল।

মনে হচ্ছে ভুল ক্লাসে চলে এসেছি। কিন্তু কাউকে জিজ্ঞেস করব কি না, বুঝতে পারছি না। দূর থেকে মহিলা কিংবা পুরুষ প্রফেসর আমার ঘাম দেখতে পেলেন কি না কে জানে। হঠাৎ তিনি পরিষ্কার ইংরেজিতে বললেন, ‘ইজ দেয়ার অ্যানিওয়ান হু ডাজ নট স্পিক ফিনিশ হিয়ার?’

আমি ইতস্তত করে হাত তুললাম। ক্লাসের একমাত্র হাত। প্রফেসর নিচ থেকে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে এলেন। কাছে আসার পর বুঝতে পারলাম তিনি মহিলা। মোটা পুরুষালি গলায় বললেন, ‘তুমি কি ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট?’

আমি ভয়ে ভয়ে বললাম, ‘ইয়েস।’

‘এটা তো লোক্যাল স্টুডেন্টদের অরিয়েন্টেশন। তোমার এখন মেইন লবিতে থাকার কথা।’

‘সরি, আমি আজই প্রথম এসেছি। লবি চিনতে পারিনি।’

‘আচ্ছা, আমার সঙ্গে এসো।’

ভদ্রমহিলা আমাকে লবিতে নিয়ে এলেন। নানা চামড়ার মানুষ সেখানে গিজগিজ করছে। বাংলাদেশের কয়েকজনেরও দেখা পেলাম। হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম। প্রফেসরকে বিনীত কণ্ঠে থ্যাংক ইউ দিলাম। তিনি পুরুষালি গলা আরো মোটা করে বললেন, ইউ আর ওয়েলকাম।

ইউনিভার্সিটি অব অউলুতে আমার প্রথম দিন এভাবেই শুরু হলো। অ্যাকাডেমিক ভাষায় অরিয়েন্টেশন ডে।

অরিয়েন্টেশন বলতে যা কল্পনা করেছিলাম বাস্তবে তার কিছু দেখা গেল না। হলিউডের মুভি থেকেই কি না কে জানে, আমার ধারণা ছিল বড় একটা ব্যানারে কোথাও লেখা থাকবে ‘ওয়েলকাম ক্লাস অব ২০১৬’। নিচে ব্যান্ডপার্টি থাকবে। একজন একজন করে স্টেজে গিয়ে নাম-পরিচয় দিতে হবে। দুয়েকজন নামধাম গুলিয়ে ফেলবে। তাদের নিয়ে হাসাহাসি হবে।

ফিনল্যান্ডে দেখা গেল অরিয়েন্টেশন বেশ সিরিয়াস বিষয়। আমাদের প্রথম কাজ স্টুডেন্ট ইউনিয়নের মেম্বার হওয়া। এই মেম্বার হতে লাগে এক বছরের জন্য ১১০ ইউরো। দুই বছরের মাস্টার্সে এটা আমাদের একমাত্র পড়াশোনা জনিত খরচ। স্টুডেন্ট ইউনিয়ন সবার জন্য বাধ্যতামূলক। এটা ছাড়া স্টুডেন্ট আইডি কার্ড এবং এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় না। আধঘণ্টার মতো লাইনে দাঁড়িয়ে ইউনিয়নের মেম্বার হয়ে গেলাম।

দ্বিতীয় কাজ রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট। আমি যে এই ইউনিভার্সিটির ছাত্র সেটার একটা সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। এসব ফর্মালিটি সারতে সারতে দুপুর ১টার মতো বেজে গেল।

এই ফাঁকে বলে নিই। প্রথম দিন সব কাজে আমাকে সাহায্য করছিল আমার ‘কুম্মি’। কুম্মি শব্দের সোজা অর্থ ‘গডফাদার’। বাংলায় বললে ‘বড় ভাই’। আমাদের দেশের ইউনিভার্সিটিগুলোতে বড় ভাই সিস্টেম আছে। নতুন স্টুডেন্টরা বড় ভাইদের সঙ্গে খাতির জমায়। কারণে-অকারণে তাদের কাছে ছুটে যায়। মাঝে মাঝে র‍্যাগ খেতে হয়। কিন্তু সাহায্যও বেশ পাওয়া যায়।

বড় ভাই সিস্টেমকে ফিনল্যান্ড অফিশিয়াল করে ফেলেছে। প্রত্যেক স্টুডেন্টের জন্য তার ডিপার্টমেন্টের একজন সিনিয়রকে বড়ভাই করা হয়। এদের বলে কুম্মি। ফিনল্যান্ডে আসার আগে থেকেই সাধারণত এদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়। নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে এরা যথেষ্ট সাহায্য করে। কুম্মির দায়িত্ব পালনের জন্য সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিছু ক্রেডিট ও টাকাপয়সা দেয়।

আমার কুম্মির নাম ইমোহ এদেত। নাইজেরিয়ান। ছয় ফুট লম্বা কৃষ্ণকায় মুশকো জোয়ান। আন্ডারপ্যান্ট পরিয়ে তেল মেখে রিংয়ে নামিয়ে দিলে নির্ঘাত রেসলার মনে হবে। শুরু থেকেই সে আমাকে প্রচুর হেল্প করেছে। প্রথম যেদিন অউলুতে আসি, স্টেশনে আমাকে রিসিভ করেছে। আমার বাসার চাবি জোগাড় করেছে হাউজিং অফিস থেকে। প্রথম কয়েকদিন শোয়ার জন্য ম্যাট্রেস ধার দিয়েছে। আমি তাকে ধন্যবাদ দিয়ে দেশ থেকে আনা চাবির রিং উপহার দিলাম। সে বত্রিশ পাটি দাঁত বের করে বলল, ‘ইউ বাংলাদেশি পিপল আর ফানি!’

ইমোহ অরিয়েন্টেশনে সারা দিন আমাকে সাহায্য করল। সে মাজিদ নামে ইরানি এক ছেলেরও কুম্মি। সকালের কাজকর্ম শেষে তিনজন লাঞ্চ করতে গেলাম সেন্ট্রাল রেস্টুরেন্টে। প্রথম দিনের লাঞ্চ ছিল ডার্ক রাইসের সঙ্গে বিফ সালাদ।

লাঞ্চের পর কিছুক্ষণ ভার্সিটি ঘুরলাম। বাংলাদেশ থেকে পড়াশোনা করে প্রথম উন্নত কোনো দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে যা হয়, আমারও তাই হলো। হাঁ করে সব ঘুরে ঘুরে দেখলাম। আলো ঝলমলে অসংখ্য করিডর আর লবি নিয়ে সুবিশাল ক্যাম্পাস। ছবির মতো সাজানো লেকচার হল, ক্লাসরুম। মাঝে মাঝে নানা কায়দায় রাখা রং-বেরঙের চেয়ার-টেবিল-সোফা। কোনোটা বিশ্রামের জন্য, কোনোটা পড়শোনার জন্য। কেউ কেউ সোফার ওপর শুয়ে বই পড়ছে। কেউ টেবিলের ওপর পা তুলে পড়াশোনা করছে। জানালার কাচ থেকে শুরু করে চেয়ার-টেবিল সব যেন নতুন, ঝকঝক করছে। বাথরুমে ঢুকে মনে হয় একটু গড়াগড়ি করে নিলেও গায়ে লাগবে না। এবং প্রতি মোড়ে মোড়ে বাথরুম। মনে পড়ল এআইউবিতে পাঁচতলা সিএসই ভবনের একমাত্র জেন্টস কাম স্টুডেন্ট বাথরুমের কথা। কতবার শুধু বাথরুমে যাওয়ার জন্য পাশের বিল্ডিংয়ে যেতে হয়েছে।

ফিনল্যান্ডের আর্কিটেকচার পৃথিবী বিখ্যাত। এদের ডিজাইনের মূলে থাকে সিমপ্লিসিটি আর ওপেননেস। এখানকার প্রতিটি ইউনিভার্সিটির আর্কিটেকচারই ইউনিক। বাইরে বরফে ঢাকা থাকে বলেই বোধহয় এরা ইন্টেরিয়রে কীভাবে যেন প্রাণ নিয়ে আসে। অউলু ভার্সিটির ক্ষেত্রে প্রাণ এসেছে প্রশস্ত ডিজাইনে। বহুতল ভবনের বদলে বিশাল এলাকাজুড়ে দোতলা-তিনতলা ভবন ছড়িয়ে আছে। প্রত্যেকটা ইন্টারকানেক্টেড, ভেতরে ঢুকলে বোঝার উপায় নেই যে এরা আলাদা। বিভিন্ন ভবনে ঢোকার জন্য ২০টার বেশি গেট আছে।

ভার্সিটির থিম কালার হলুদ এবং বেশির ভাগ দেয়াল, সাইনবোর্ড কটকটে হলুদ রঙের। বাসাবাড়ির জন্য হলুদ রীতিমতো জঘন্য রং বলে জানতাম। কিন্তু অউলুতে এসে এই ধারণা পাল্টে গেল। ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারলে হলুদের চেয়ে হাসিখুশি রং হয় না। ম্যাড়মেড়ে আবহাওয়ায় হলুদ রং ভার্সিটির করিডরগুলোকে অন্যরকম প্রাণ দিয়েছে। এ ছাড়া বেশির ভাগ করিডরেই প্রাকৃতিক আলো ঢোকার ব্যবস্থা আছে। সব মিলিয়ে প্রথম দিনেই ভার্সিটির ‘চেহারা’র প্রেমে পড়ে গেলাম।

অরিয়েন্টেশনে ফিরে আসি। দিনটা যত রসকষহীন মনে হচ্ছিল, বিকেলে দেখা গেল তা না। গান-বাজনার ব্যবস্থা আছে। তবে ক্যাম্পাসে না। শহরের কেন্দ্রে, অর্থাৎ সিটি সেন্টারে। জায়গাটার নাম রতুয়ারি। অউলুর সব বড় বড় ইভেন্ট নাকি ওখানেই হয়। শহরের মেয়র, ইউনিভার্সিটির রেক্টর (উপাচার্য) আজ সেখানে উপস্থিত থাকবেন। আমাদের বরণ করে নেওয়ার জন্য ‘টোস্ট’ করবেন।

সিটি সেন্টার যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় আজ ফ্রি বাসের ব্যবস্থা করেছে। আমি বাসে উঠলাম। ইমোহ আর মাজিদ পরের বাসে আসবে। মাজিদ রেইনকোট কোথায় রেখেছে খুঁজে পাচ্ছে না। ইমোহ তাকে নিয়ে প্রতিটা কোট স্ট্যান্ড খুঁজে বেড়াচ্ছে। কম করে হলেও পঞ্চাশটা কোট স্ট্যান্ড আছে।

ইউনিভার্সিটি থেকে সিটি সেন্টার বিশ মিনিটের পথ বাসে। বাসে আমার পাশে বসল সোনালি চুলের জার্মান এক মেয়ে। হাই দিয়ে বলল, ‘আমি মারিটা। মিউনিখ থেকে এসেছি। তুমি?’

‘হাই। আমি হাসান। বাংলাদেশ থেকে এসেছি।’

মারিটা ভুরু কুঁচকে বলল, ‘বাংলাদেশ? ইজ দিস ইন আমেরিকা? পুয়ের্টো রিকোর কাছাকাছি?’

আমি মনে মনে বললাম, আমার অরিয়েন্টেশন তুই এখানেই মাটি করলি। দাঁড়া, মজা দেখাচ্ছি।

হাসিমুখে বললাম, ‘মিউনিখ? এটা কোনো দেশের নাম নাকি? আগে তো শুনিনি। ইন্ডিয়ার আশপাশে নাকি? সাউথ এশিয়া?’

সঙ্গে সঙ্গে মারিটার ফর্সা মুখ লাল হয়ে গেল। মিউনিখের মতো জগদ্বিখ্যাত শহর চিনতে না পারায় নিশ্চয়ই তার জার্মান অহংবোধে লেগেছে। এবং নিজের ভুলটাও বুঝতে পেরেছে। মৃদু গলায় বলল,  ‘সরি।’

আমি বললাম, ‘সরি বলার কিছু নেই। তুমি আমার দেশ চিনতে পারোনি, আমিও তোমার সিটি চিনতে পারিনি। কাটাকাটি।’

আমার উত্তর কি অফেন্সিভ মনে হচ্ছে? কিন্তু আমি মনে করি একটা দেশকে চিনতে না পারার চেয়ে বড় অপরাধ আন্দাজে সেটার একটা অবস্থান বলা। না চিনলে শুধু ‘নাইস টু মিট ইউ’ দিয়ে সারলেই হয়। কেউ যেচে জিজ্ঞাসা করে না, তুমি কি চিনতে পেরেছো আমার দেশ কে? মারিটা শুধু  যে বাংলাদেশকে আমেরিকা পাঠিয়ে দিয়েছে তা নয়। নিজের দেশের নাম জার্মানি না বলে শহরের নাম বলেছে। আমার কী ঠেকা পড়েছে তার শহরের নাম জানতে?

তবে সুখের কথা, প্রথম দিনের পর এমন অবস্থায় আর পড়তে হয়নি। বাংলাদেশের নাম শুনে চিনতে পারেনি এমন কাউকে পাইনি। ২০১৬ সালে এসে এটা হওয়ার কথাও না। মারিটার মতো দুয়েকজনকে বাদ দিলে বেশির ভাগ মানুষ পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশের নাম জানে। আমার অনেক ফিনিশ বন্ধুর বাংলাদেশ নিয়ে বেশ স্পষ্ট ধারণা আছে।

রতুয়ারি পৌঁছে দেখা গেল আয়োজন খারাপ না। মাঝারি সাইজের স্টেজ বেশ সুন্দর করে সাজানো। স্টেজের সামনে ফাঁকা জায়গায় ছাত্রছাত্রীরা জড় হয়েছে। একপাশে বিনামূল্যে মটরশুটি স্যুপ আর আঙুরের জুস পাওয়া যাচ্ছে। টকটকে লাল একটা ট্রাক চত্বরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে। সেটার ওপর দাঁড়িয়ে কয়েকজন বাঁশি বাজাচ্ছে আর ইউনিভার্সিটির নাম লেখা পেস্ট কালারের ব্যান্ডানা বিলি করছে। আমিও একটা নিলাম।

চারদিকে বেশ উৎসব উৎসব ভাব। এর মধ্যে আবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। কারো সেটা মাথাব্যথা নেই মনে হচ্ছে। শুধু পটাপট কয়েকটা ছাতা খুলে গেল। আমি বাংলাদেশি কয়েকজনের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে ঘুরে বেড়াতে লাগলাম। মটরশুটি স্যুপ খেয়ে হতচকিত হয়ে গেলাম। স্বাদ কিছুটা আমাদের চটপটির মতো। কেবল ঝাল নেই, টক নেই। তারপরও বেশ ভালো লাগছিল খেতে।

এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর আরতো নিনিমাকি বক্তব্য রাখলেন। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের সারমর্ম, আমরা আমাদের সব দরজা তোমাদের জন্য খুলে দিয়েছি। এবার তোমাদের পালা আকাশ ছোঁয়ার।

এরপর লাল রঙের পানীয় উঁচিয়ে শুভকামনা করলেন। আমরা হুল্লোড় করে উঠলাম, শিষ দিতে থাকলাম। রেক্টর এক চুমুকে গ্লাস খালি করলেন। সবাই প্রবল বেগে হাত তালি দিল। এটাই টোস্ট।

এরপর ছোটখাটো কিছু মজার গেম হলো। বক্তৃতা হলো। এরপর এলো সাদা পোশাক পরা অর্কেস্ট্রা দল। ধীরলয়ের মিউজিক দিয়ে তারা শুরু করল। আস্তে আস্তে দ্রুততর। যখন মনে হচ্ছিল কিছুটা জমে উঠেছে, তখনই বাজানো শেষ হয়ে গেল। সেই সঙ্গে শেষ হলো অনুষ্ঠান।

সেই পুরো সপ্তাহজুড়ে বিভিন্ন অরিয়েন্টেশন সেমিনার, পরিচিতিপর্ব লেগে থাকল। পড়াশোনার ধরন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচিতি, ফিনদের লাইফস্টাইল, ভার্সিটির বিভিন্ন ক্লাব—নানা বিষয়ে বিশাল জ্ঞান অর্জন করলাম।

আমাদের দেশের মতো ডিবেট ক্লাব, কালচারাল ক্লাব, ট্যুর ক্লাবের বালাই নাই। মোটে তিনটা ক্লাব টাইপের অর্গানাইজেশন আছে—ESN, NISO এবং AIESEC। এর মধ্যে প্রথম দুটির কাজ মূলত পার্টি আর ট্রিপ। এদের মেম্বার হলে কিছুটা কম পয়সায় স্টুডেন্ট পার্টিতে গিয়ে নাচানাচি করা যাবে। দল বেঁধে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরা যাবে। আর AIESEC সিরিয়াস ধরনের ক্লাব। এরা ভলেন্টিয়ারশিপের জন্য বিভিন্ন দেশে পাঠায়। ক্যারিয়ার রিলেটেড কাজকর্ম করে। আগে-পিছে চিন্তা না করে তিনটাতেই জয়েন করলাম।

সপ্তাহ শেষে দেখা গেল ডজনখানেক বন্ধুবান্ধব বানিয়ে ফেলেছি। নিজেকে আর খুব একটা নতুন লাগল না। ফিনল্যান্ডকে বোধহয় বুঝতে শুরু করেছি।