বিজয় দিবসে রাজধানীর যেসব জায়গায় ঘুরবেন
মহান বিজয় দিবসের ছুটিতে বন্ধু-স্বজনদের নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে পারেন। আর এই ছুটিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণে আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলি যেমন সমৃদ্ধ হবে, তেমনি মুক্তিযোদ্ধার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক ছুটির দিনে ঢাকার কোন কোন জায়গা ঘুরার জন্য উপযুক্ত:
জাতীয় স্মৃতিসৌধ
ঢাকায় সাভার অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত মুক্তিযোদ্ধা ও নিহত বেসামরিক বাঙালি ও অবাঙ্গালিদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত একটি স্মারক স্থাপনা। এটি সাভারে অবস্থিত। এর নকশা প্রণয়ন করেছেন স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন। এখানে মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের দশটি গণকবর রয়েছে।
জাতীয় জাদুঘর
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত। ১৯৮৩ সালের ১৭ নভেম্বর এটি জাতীয় জাদুঘরের মর্যাদা পায়। ১৯১৩ সালের ৭ আগস্ট ‘ঢাকা জাদুঘর’ নামে যাত্রা শুরু করেছিল জাতীয় জাদুঘর।জাদুঘরটি শাহবাগ মোড়ের কাছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক এবং চারুকলা ইনস্টিটিউটের কাছে অবস্থিত। এটিতে নৃবিজ্ঞান, চারুকলা, ইতিহাস, প্রকৃতি, আধুনিক ও প্রাচীন বিশ্ব-সভ্যতা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি বিষয়ের উপর ৪৫টি বিভিন্ন প্রদর্শনী (গ্যালারি) রয়েছে। এ ছাড়া এখানে একটি সংরক্ষণাগার, গ্রন্থাগার, মিলনায়তন, সিনেপ্লেক্স এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনালয় রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
এটি মুক্তিযুদ্ধ-ভিত্তিক একটি জাদুঘর। এটি বাংলাদেশের একমাত্র মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এটি ঢাকার এফ-১১/এ-বি, সিভিক সেক্টর, আগারগাঁওয়ে অবস্থিত। বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ এই জাদুঘরের উদ্বোধন হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এই জাদুঘরটি দেখতে গিয়ে তাদের সাহস, দৃঢ়তা এবং সংঘর্ষের কথা শোনতে পারবেন। মুক্তিযুদ্ধের অনেক দুর্লভ বস্তু আছে এই জাদুঘরে।
লালবাগ কেল্লা
বিজয় দিবসের ছুটিতে লালবাগ কেল্লা একটি দর্শনীয় স্থান। লালবাগ কেল্লার তিনটি বিশাল দরজার মধ্যে যে দরজাটি বর্তমানে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া, সেই দরজা দিয়ে ঢুকলে বরাবর সোজা চোখে পড়বে পরী বিবির সমাধি। লালবাগ কেল্লা চত্বরে আরো রয়েছে-দরবার হল ও হাম্মামখানা, উত্তর-পশ্চিমাংশের শাহি মসজিদ। ঢাকায় এত পুরোনো মসজিদ খুব কমই আছে।
লালবাগ কেল্লার দরবার হল ও হাম্মামখানাটি বর্তমানে সর্বসাধারণের দেখার জন্য একটি জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়েছে, যা পূর্বে নবাব শায়েস্তা খাঁর বাসভবন ছিল আর এখান থেকেই তিনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। শায়েস্তা খাঁর ব্যবহার্য নানান জিনিসপত্রও সেখানে সযত্নে আছে। তাছাড়া তৎকালীন বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র, পোশাক, সে সময়কার প্রচলিত মুদ্রা রয়েছে জাদুঘরে। তিনশ বছরের পুরোনো স্থাপনা ও সে সময়ের সম্রাটের ব্যবহৃত নানা জিনিস দেখতে পারাটা সৌভাগ্যের, সে সঙ্গে বিস্ময়েরও বটে।
বিজয় দিবসে এই জায়গাগুলো দেশবাসীদের জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে এবং ঐতিহাসিক মুহূর্তে অবস্থান করে। তবে, স্থানে যাওয়ার আগে নির্দিষ্ট ইভেন্ট এবং সময়সীমা নিরীক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।