জাবি ক্যাম্পাসের বাহারি ভর্তার গল্প
নগরজীবনের ব্যস্ততার মাঝে মন চায় একটু স্বস্তির নিশ্বাস নিতে। তাই তো নগরীর আশপাশে যাওয়া যেতে পারে, যা আপনার একঘেয়েমি ব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি দূর করে দেবে। ঠিক এমনই একটি জায়গা ঢাকার সবচেয়ে কাছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এখানে অতি সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন আপনি। প্রিয়জন, পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে ছুটির দিনে ঘুরে আসতে পারেন এই ক্যাম্পাস থেকে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। তাই বন্ধু ও প্রিয়জনকে নিয়ে সময় কাটানোর জন্য সেরা জায়গা হতে পারে আপনার কাছের এই ক্যাম্পাস।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি ক্যাম্পাসে আছে হরেক রকমের খাবার। এসব বাহারি খাবার আপনার মন কাড়বে। তা ছাড়া জাবি ক্যাম্পাসে খাবারের মূল্যও কম। একই স্থানে মিলবে হরেক রকমের খাবার।
আপনার বন্ধু ও প্রিয়জনকে নিয়ে খেতে পারেন জাবির বটতলা, ডেইরি গেট, প্রান্তিক, টারজান পয়েন্ট, পরিবহণ চত্বর, পিঠা চত্বর কিংবা মুরাদ চত্বরে।
যেখানে খাবেন
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে নামলেই হাতের বাম দিকে নাশতার জন্য রয়েছে বেশ কিছু দোকান। সেখানে সাশ্রয়ী মূল্যে রুটি-পরাটা কিংবা ভুনা খিচুড়ি, রুটি-কলা দিয়ে সেরে নিতে পারেন সকালের নাশতা। এ ছাড়া বটতলা হতে পারে নাশতার উত্তম স্থান।
ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করে পায়ে হেঁটে সমাজবিজ্ঞান ভবন ও নতুন কলা ভবনের সামনে দিয়ে চলে আসবেন জাবির ঐতিহ্যবাহী বটতলায়। রিকশায় আসলে ভাড়া ১০ টাকা।
খাবারের জন্য বটতলা সব সময়ই আগন্তুকদের পছন্দের শীর্ষে থাকে। বটতলার নামকরণ কবে বা কীভাবে হয়েছে, তা জানা না গেলেও লোকমুখে শোনা যায়, আগে এখানে বড় বটগাছ ছিল। সেখান থেকেই এই বটতলার নামকরণ। প্রথমে চা-নাশতার জন্য দু-তিনটি দোকান থাকলেও বর্তমানে প্রায় ৩৫টি খাবার হোটেল আছে এখানে। সকাল ও দুপুরের খাবারের জন্য এখানে মিলবে রুটি-পরাটা, বাহারি ভর্তার সাথে সাদা ভাত।
ভেজাল খাবার আর ফাস্টফুডে অতিষ্ঠ যখন শহুরে জীবন, তখন উপভোগ করতে পারেন বটতলার ৩০ পদের ভর্তা। এখানে পাবেন বাদাম ভর্তা, সরিষা ভর্তা, পেঁপে ভর্তা, ডাল ভর্তা, শিম ভর্তা, ধনেপাতা ভর্তা, কালিজিরা ভর্তা, মরিচ ভর্তা, বেগুন ভর্তা, ঢেঁড়শ ভর্তা, টমেটো ভর্তা, আলু ভর্তা, লাউশাক ভর্তা, কলা ভর্তা, কচু ভর্তা, রসুন ভর্তা ও ডিম ভর্তা। এ ছাড়া ইলিশ মাছের ভর্তা, শুঁটকি মাছের ভর্তা, চিংড়ি মাছের ভর্তা, টাকি মাছের ভর্তা, রুই মাছের ভর্তা, চিকেন ভর্তা, লইট্ট্যা শুঁটকিসহ বাহারি সব ভর্তা রয়েছে। প্রকারভেদে এসব ভর্তার দাম পাঁচ থেকে ১০ টাকা।
শুধু ভর্তাই নয়, মিলবে নানা ধরনের মাছ, কবুতরের মাংস, হাসের মাংস, গরু, মুরগি ও বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে মাত্র ২৭ কিলোমিটার দূরে লাল ইট আর প্রকৃতির সবুজ আচ্ছাদনে মোড়ানো জাবি ক্যাম্পাস। ঢাকার গুলিস্তান, ফার্মগেট, কল্যাণপুর কিংবা গাবতলী থেকে নবীনগর, মানিকগঞ্জগামী যেকোনো বাসে উঠলেই ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনে নামিয়ে দেবে। ভাড়া পড়বে গড়ে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। ক্যাম্পাসের ভেতরে রিকশা অথবা ভ্যানে সহজেই যাতায়াত করতে পারবেন।
মুরাদ চত্বরের এক কাপ চায়ে ক্লান্তি দূর
পিঠা চত্বর থেকে সামনের দিকে গেলেই চোখ আটকে যাবে লাল শাপলার লেকে পরিযায়ী পাখিদের জলকেলির দৃশ্যে। পরিবহণ চত্বরের মামাদের চায়ের কাপের শব্দ আপনাকে আমন্ত্রণ জানাবে।
সতর্কতা
করোনা পরিস্থিতিতে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। অশালীন বা শৃঙ্খলা-বহির্ভূত কোনো কাজ করা যাবে না। মোটরসাইকেল বা কার নিয়ে আসলে গেইটের বাইরে নিরাপদ স্থানে পার্কিং করে আসতে হবে। খাবারের সময় অবশ্যই মূল্যতালিকা দেখে নেবেন।