ভাষা শহীদ সালামের স্মৃতি জাদুঘরে ঘুরে আসুন

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি গানটির চরণগুলো বাজতে দেখা যায় ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি এলে, গানের মতো ফেব্রুয়ারি মাসে ভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে গুরুত্ব বাড়ে ফেনীর সালাম নগরের নিষ্প্রাণ বিবর্ণ পড়ে থাকে ভাষা শহীদ আবদুস সালাম স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগারের।
ইতিহাস
৫২’র ভাষা আন্দোলনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মাতৃভাষা বাংলা চাই শ্লোগানে রাজপথে নামলে ২১ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে আহত হন সালাম। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে দীর্ঘ দেড় মাস চিকিৎসাধীন শেষে ৫২’র ০৭ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন তিনি। বাংলাদেশ সরকার ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সালামকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে। তাঁর স্মৃতি রক্ষায় নিজ গ্রামে ২০০৮ সালে দাগনভুঁঞা উপজেলার মাতুভুঁঞা ইউনিয়নে গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়।

এডিপির অর্থায়নে ১২ শতক জমিতে সাড়ে ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সালাম নগরে জাদুঘরটি স্থাপন করা হয়। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ২০০৮ সালের ২৬শে মে সালাম স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগারটি উদ্বোধন করেন। ২০১১ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি শহীদ আবদুস সালামের ছোট ভাইয়ের মেয়ে খাদিজা বেগমকে মাসিক ছয় হাজার টাকা বেতনে গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
যেভাবে যাবেন
ভাষা শহীদ আবদুস সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি ফেনী শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে ফেনী-নোয়াখালী সড়কের ডান পাশে মাতুভূঞা ব্রিজের কাছে সালাম নগরে অবস্থিত। ঢাকা হতে চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী যেকোনো বাসে চড়ে সরাসরি ফেনীর মহিপাল বাসস্ট্যান্ড আসতে পারবেন। এ ছাড়া চট্টগ্রামগামী ট্রেনে ফেনী রেলওয়ে স্টেশনে নেমে সিএনজি বা অটোরিকশা ভাড়া করে মহিপাল মোড়ে আসা যায়।
ফেনীর মহিপাল বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে সালাম নগরে ভাষা শহীদ আবদুস সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের অবস্থান। মহিপাল বাসস্ট্যান্ড থেকে সিএনজি বা বাসে করে ভাষা শহীদ আবদুস সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
ফেনী সার্কিট হাউস, ফেনী জেলা পরিষদ ডাক বাংলো, এলজিইডি রেস্ট হাউস, পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউস এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রেস্ট হাউসে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।

এ বিষয়ে গ্রন্থাগারিক লুৎপুর রহমান বাবলু জানান, সেখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বই আছে। সাম্প্রতিক বন্যায় অনেকগুলো বই ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরই মধ্যে নতুন কিছু বই ও আসবাবপত্র সরবরাহ করেছেন। আশা করি পাঠকের খোরাক যোগাবে বইগুলো।
দাগনভূঁঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স.ম আজহারুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় ভাষা দিবসে সালাম নগরে ভাষা শহীদ আবদুস সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি যাদুঘর প্রাঙ্গণে শহীদ মিনারে পুস্প মালা অর্পণ এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে গ্রন্থাগারের নতুন নতুন বই পৌঁছে দিয়েছি। নতুন আলমারিসহ আসবাবপত্র সরবরাহ করেছি। শীঘ্রই আরো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বই সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া সারা বছর যেন এখানে মানুষের সরব উপস্থিতি থাকে। সেই লক্ষে উপজেলা থেকে এখানে প্রতিমাসে কোনো না কোনো প্রোগ্রাম আয়োজন হবে।’