অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার প্রয়োগ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।
সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পেয়ে ইউরোপের প্রধান প্রধান দেশ এই টিকার ব্যবহার স্থগিত করেছে। সর্বশেষ গতকাল সোমবার জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেন এবং রোববার নেদারল্যান্ডস তাদের দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রয়োগ স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। নরওয়েতে এই কোম্পানির টিকা নেওয়ার পর রোগীদের অনেকের রক্ত জমাট বাধার সমস্যা দেখা দিয়েছে।
তবে ডব্লিউএইচও বলছে, টিকা এবং রক্ত জমাট বাধার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। আজ মঙ্গলবার এক জরুরি সভায় বসবেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিকা বিশেষজ্ঞরা।
একইভাবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা কর্তৃপক্ষও বলছে, তাদের টিকা নেওয়ার সঙ্গে রক্ত জমাট বাধার কোনো যোগসাজশ নেই। বিবৃতিতে কোম্পানিটি জানিয়েছে, গোটা ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য মিলে প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ মানুষকে তাদের টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ জনেরও কম মানুষের শরীরে গত সপ্তাহে রক্ত জমাট বাধার সমস্যা দেখা দিয়েছে। টিকাপ্রাপ্তদের মাঝে ১৫ জনের ডিভিটি অর্থাৎ ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা এবং ২২ জনের পালমোনারি অ্যাম্বোলিজম অর্থাৎ ফুসফুসের রক্তপ্রবাহনালীতে জমাট বাঁধার ঘটনা ঘটেছে।
ঝুঁকির তুলনায় এই টিকার উপকারিতার পাল্লা ভারি বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সি (ইএমএ)। টিকা নেওয়ার পর রক্ত জমাট বাঁধা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে ইএমএ। তবে তারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে। আজ মঙ্গলবার জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকে বসছে ইউরোপের এই স্বাস্থ্য অভিভাবক সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার তারা সভার সিদ্ধান্তের কথা জানাবে।
জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেন্স স্প্যান বলেছেন, ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সঙ্গে সেরেব্রাল ভেইন থ্রমব্রোসিস বা মস্তিষ্কে রক্ত জমাটবাঁধার সম্পর্কের খবর পাওয়ায় আমরা কোম্পানিটির টিকার ব্যবহার স্থগিত করেছি।’
এই সিদ্ধান্তকে ‘অরাজনৈতিক’ হিসেবেও উল্লেখ করেন জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
কিছুক্ষণ পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সির (ইএমএ) পরবর্তী নোটিশের আগ পর্যন্ত ফ্রান্সে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা স্থগিত করা হলো।’
ডেনমার্ক, নরওয়ে, বুলগেরিয়া, আইসল্যান্ড ও থাইল্যান্ড এরই মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ব্যবহার স্থগিত করেছে।
নেদারল্যান্ডস সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, নরওয়ে ও ডেনমার্ক থেকে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার রিপোর্ট পাওয়ায় পূর্ব সতর্কতাস্বরূপ এই পদক্ষেপ নিয়েছে তারা।
অন্যদিকে, বেলজিয়াম, পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক ও ইউক্রেন অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, আমাদের দেশে যেসব টিকা দেওয়া হচ্ছে তার সবই নিরাপদ বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।