আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গাদের ন্যায় বিচারের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে: এইচআরডব্লিউ

Looks like you've blocked notifications!

দুটি আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আনা গণহত্যার অভিযোগে রোহিঙ্গাদের ন্যায় বিচারের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানিয়েছে, সংস্থাটি মঙ্গলবার ২০২০ সালের তাদের বিশ্ব প্রতিবেদনে জানায়, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক বিচারের জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মুখোমুখি হয়েছে।

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দমনমূলক ফৌজদারি আইনের ব্যবহার বাড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুক্ত মত প্রকাশ ও সমাবেশের অধিকারও তীব্রভাবে কমিয়ে দিয়েছে।

সংগঠনটির এশিয়ার উপপরিচালক পিল রবার্টসন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংসতার বিষয়ে অবশেষে আন্তর্জাতিক আদালতে ন্যায় বিচারের দ্বার উন্মোক্ত হয়েছে।’

৬৫২ পৃষ্ঠার বিশ্ব রিপোর্ট ২০২০ এর ৩০তম সংস্করণে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রায় ১০০টি দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেছে।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে)  মামলা করে। অভিযোগের জবাব দিতে মিয়ানমার ১০-১২ ডিসেম্বর আইসিজেতে হাজির হয়েছিল। সেখানে দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি গণহত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।

নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)- ২০১৬ সালের অক্টোবরের পর থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, নির্বাসনসহ অন্যান্য অমানবিক কাজ এবং নির্যাতনের তদন্তের জন্য প্রসিকিউটরকে অনুমতি দিয়েছে।

আদালত এরইমধ্যে নির্বাসন ও অন্যান্য সম্পর্কিত অপরাধের বিষয়ে তার এখতিয়ারের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এক কঠোর বিদ্রোহ দমন অভিযান শুরু করে। এসময় গণধর্ষণ, হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়াসহ জাতিগত নির্মূল অভিযান থেকে বাঁচতে ১০ লাখের অধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

এছাড়া মিয়ানমারে প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা মারাত্মক পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করছেন। সরকারের নিপীড়ন, সহিংসতা, চলাচলে চরম নিষেধাজ্ঞার শিকার ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন তারা।

জাতিসংঘের সমর্থিত ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গা, কাচিন, শান এবং কারেন জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দ্বারা মারাত্মক অপরাধের প্রমাণ মিয়ানমারের জন্য সদ্য পরিচালিত স্বাধীন তদন্তকারী মেকানিজমকে (আইআইএমএম) কাজ শেষ করে হস্তান্তর করে।

রবার্টসন বলেন, ‘অং সান সু চি এবং তার ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি সরকার সামরিক শাসনের সময় প্রণীত দমনমূলক আইনগুলো বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।’

‘এর পরিবর্তে তারা এই আইনগুলো তাদের সমালোচকদের ওপর ব্যবহার করছে ও এমনকি নতুন দমনমূলক আইন প্রবর্তন করেছে।’