ইউক্রেনের ৩০০ শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়নি যুক্তরাজ্য
ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান সামরিক অভিযান গড়িয়েছে ১৩তম দিনে। সর্বাত্মক হামলার মুখে প্রাণ বাঁচাতে ইউক্রেন ছেড়েছেন দেশটির লাখ লাখ নাগরিক। প্রতিবেশী দেশগুলোসহ ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও আশ্রয় নিচ্ছেন তারা। তবে এই বিপদের দিনেও যুক্তরাজ্য সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০০ ইউক্রেনীয়কে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ফ্রান্সের ক্যালাইস থেকে স্থল সীমান্তপথে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টার সময় তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
তবে যুক্তরাজ্য থেকে যতগুলো ভিসা ইস্যু করা হয়েছে, সেই সংখ্যাও প্রায় সমান। এ ছাড়া অনেক শরণার্থী ফ্রান্সের ক্যালাইস বন্দর দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করে থাকেন।
ফ্রান্সের ক্যালাইসের সাব-প্রিফেক্ট ভেরোনিক ডেপ্রেজ-বউদিয়ারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ৫৮৯ জন ইউক্রেনীয় এই সীমান্তে এসেছেন। তাদের মধ্য থেকে ২৮৬ জনকে যুক্তরাজ্যে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
ক্যালাইসে অবস্থান করা বেশ কিছু ইউক্রেনীয় নাগরিক বিবিসিকে বলেছেন, পারিবারিক পুনর্মিলন ভিসা পেতে অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য তাদের এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে যুক্তরাজ্যের সংশ্লিষ্ট দপ্তর জোর দিয়ে বলছে যে, ইউরোপজুড়ে থাকা ব্রিটিশ ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলোতে এই সপ্তাহে অ্যাপয়েন্টমেন্ট খালি রয়েছে।
ভেরোনিক ডেপ্রেজ-বউদিয়ার বিবিসিকে বলেছেন, ‘আটকে পড়া এই মানুষদের সহায়তা করার জন্য এখানে আরও সংগঠিত একটি টিম তৈরি করাটা এখন গুরুত্বপূর্ণ।’
বিবিসি বলছে, ইউক্রেনীয় ফ্যামিলি স্কিমের অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭ হাজার ৭০০ জন যুক্তরাজ্যে আসার জন্য আবেদন করেছেন এবং তাদের মধ্যে ৩০০ জনকে ভিসা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে সোমবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানান, ‘ব্রিটেন খুবই আন্তরিক দেশ কিন্তু কারা দেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে, তাদের যাচাই-বাছাই করে দেখতে চাই আমরা।’
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একই সঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর এক সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির বহু শহর কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছেড়েছেন লাখ লাখ ইউক্রেনীয়।