ট্রাম্প বললেন

‘ইউক্রেন পরে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আগে দেশের স্কুলের নিরাপত্তায় অর্থায়ন’

Looks like you've blocked notifications!
ইউক্রেনে সাহায্য পাঠানোর আগে মার্কিন স্কুলগুলোর নিরাপত্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের জোর দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত

ইউক্রেনে সাহায্য পাঠানোর চেয়ে মার্কিন স্কুলগুলোর নিরাপত্তার জন্য অর্থায়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর বিবিসির।

আগ্নেয়াস্ত্রের পক্ষে আয়োজিত এক সম্মেলনে ট্রাম্প মন্তব্য করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সাহায্য হিসেবে পাঠাতে পারে, তাহলে দেশের মাটিতে আমাদের শিশুদের নিরাপদ রাখতে আমাদের যেকোনো কিছু করতে পারা উচিত।’

হিউস্টনে আগ্নেয়াস্ত্রের পক্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সংগঠন ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের চলমান সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ইউভালডে শহরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক কিশোরের গুলিতে ১৯টি শিশু মারা যাওয়ার তিন দিন পর এমন বক্তব্য দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্প বলেন, ‘ইরাক ও আফগানিস্তানে আমরা ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করেছি এবং এর বিনিময়ে কিছু পাইনি। পৃথিবীর বাকি দেশের গঠনে সাহায্য করার আগে আমাদের নিজেদের সন্তানদের জন্য নিরাপদ স্কুল গঠন করা উচিত।’

এ মাসের শুরুতে মার্কিন কংগ্রেস ইউক্রেনে প্রায় চার হাজার কোটি ডলার সামরিক সহায়তা পাঠানোর পক্ষে ভোট দেয়।

গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান শুরু করার পর মার্কিন আইনপ্রণেতারা এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে প্রায় পাঁচ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা পাঠানোর পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প আগ্নেয়াস্ত্র আইন কঠোর করার বিরোধিতা করেছেন। তাঁর মতে, ‘অশুভ’ শক্তির বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষা করতে সভ্য মার্কিনিদের আগ্নেয়াস্ত্রের অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন।

স্কুলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতি স্কুলে অন্তত এক জন সশস্ত্র পুলিশ কর্মকর্তা রাখা এবং মেটাল ডিটেক্টরসহ কেবল একটি প্রবেশপথ রাখার প্রস্তাব করেন তিনি।

এ ছাড়া ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘অস্ত্র হাতে একজন মন্দ লোককে থামানোর একমাত্র পথ হচ্ছে—অস্ত্র হাতে একজন ভালো মানুষ থাকা।’

ট্রাম্প আরও বলেন—অস্ত্র ব্যবহারের ওপর কড়াকড়ি আরোপ না করে বন্দুকধারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নজর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

নিজের বক্তব্যে টেক্সাসের ইউভালডের স্কুলে হওয়া গুলির ঘটনায় নিহতদের নাম নেওয়ার পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘অশুভ শক্তির উপস্থিতির কারণে আইন মেনে চলা নাগরিকদের অস্ত্রধারণ যৌক্তিক, তাঁদের নিরস্ত্র করা নয়।’

পঞ্চাশ লাখ সদস্যের ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক এ সভা অনুষ্ঠিত হয় টেক্সাসের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল থেকে সাড়ে ৪০০ কিলোমিটার দূরে। এ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠানে অংশ নেননি বেশ কয়েক জন বক্তা ও সংগীতশিল্পী—যাঁদের মধ্যে রয়েছেন টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট, সিনেটর জন কর্নিন এবং টেক্সাসে হওয়া হামলায় ব্যবহৃত রাইফেলের প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। ওই অনুষ্ঠানের ভেন্যুর বাইরে শত শত বিক্ষোভকারী ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

বিক্ষোভকারীদের হাতের ব্যানারে লেখা ছিল—‘এনআরএ শিশু হত্যা করে’, ‘শিশুদের রক্ষা করো, অস্ত্র নয়।’ বিক্ষোভকারীরা ক্রুশ ও নিহত শিশুদের ছবিও প্রদর্শন করেন।