ইরানি হামলায় আহত মার্কিন সেনার সংখ্যা আরেক দফা বাড়াল পেন্টাগন

ইরাকের আইন আল-আসাদ ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত সেনার সংখ্যা আরেক দফা বাড়াল যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বা পেন্টাগন। আগের ঘোষণার চেয়ে আরো ১৬ জন বাড়িয়ে এবার ৫০ জন সেনা আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে পেন্টাগন।
পেন্টাগনের মুখপাত্র লে. কর্নেল টমাস ক্যাম্পবেল স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) পর্যন্ত ৫০ জন মার্কিন সেনা মস্তিষ্কে আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।’ পেন্টাগনের মুখপাত্র জানান, আহতদের মধ্যে ৩১ জনকে ইরাকেই চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ডিউটিতে ফিরে গেছেন। এই ৩১ জনের মধ্যে ১৫ জনকে সম্প্রতি চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত নিয়ে ১৮ জন মার্কিন সেনাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে পাঠানো হয়েছে। আর বাকি একজনকে কুয়েতে নেওয়া হয়েছে। ইরানি সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে এ খবর জানিয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ৩৪ জন মার্কিন সেনা আহত হওয়ার কথা জানিয়েছিল পেন্টাগন। ইরানের কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানির হত্যার প্রতিশোধ নিতে গত ৮ জানুয়ারি ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আইন আল-আসাদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, এতে কোনো মার্কিন সেনা আহত হয়নি। এরপর পেন্টাগন স্বীকার করে, হামলার পর মাথায় আঘাতজনিত কারণে ১১ মার্কিন সেনাকে শুশ্রূষা করা হচ্ছে।
এমন অবস্থায় মার্কিন সেনাদের আহত হওয়া বা না হওয়া নিয়ে এমন ঢাকঢাক গুড়গুড় প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সে সময় সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে ছিলেন। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি শুনেছি ওদের মাথাব্যথা করছিল, আর কী কী যেন সমস্যা হয়েছে। কিন্তু আমার যা মনে হয়, আমি বলতে পারি, খুব একটা গুরুতর কিছু হয়নি।’
সেনারা মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন কি না প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এসবকে খুব গুরুতর আঘাত বলব না। কেননা এর চেয়ে বেশি আঘাতপ্রাপ্তদের আমি আগে দেখেছি।’
আবার দাবি করেন, এসব সেনার খানিকটা ‘মাথাব্যথা’ করছিল বলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত ৮ জানুয়ারি ভোরে ইরান ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর দাবি করেছিল, তাদের হামলায় ৮০ মার্কিন সেনা নিহত এবং ২০০ জন সেনা আহত হয়েছেন। আহত সেনাদের চিকিৎসা দিতে বিমানে করে আইন আল-আসাদ ঘাঁটি থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন।
গত ৩ জানুয়ারি স্থানীয় সময় ভোররাতে বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় জেনারেল কাসেম সোলেইমানিসহ ইরান ও ইরাকের ১০ সেনা কমান্ডার নিহত হন। এর প্রতিশোধ হিসেবে ৮ জানুয়ারি আইন আল-আসাদ ঘাঁটিতে এক ডজনেরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান।