ইরানের জনগণের উদ্দেশে আবারও ফার্সি ভাষায় ট্রাম্পের টুইট
ইরানের জনগণকে উদ্দেশ করে আবারও ফার্সি ভাষায় টুইট করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইটে তিনি লেখেন, ‘ইরানের সম্মানিত জনগণ, যারা যুক্তরাষ্ট্রকে ভালোবাসে, তাদের এমন এক সরকার প্রাপ্য, যারা প্রতিশোধের জন্য হত্যার পরিবর্তে জনগণের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। ইরানকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়ার বদলে সন্ত্রাসীদের একপাশে রেখে ইরানকে আবার মহিমান্বিত করতে হবে দেশটির নেতাদের।’ আজ শনিবার বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফার্সি ভাষায় এ টুইট করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প আরো লেখেন, ‘ইরানের তথাকথিত ‘সর্বোচ্চ নেতা’ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ সম্পর্কে কিছু কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছেন। তাদের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, তাদের জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাঁর কথা বলায় অনেক সাবধান হওয়া উচিত।’
এর আগে গত ১১ জানুয়ারি ইরান সরকারের বিরুদ্ধে টুইট করেছিলেন ট্রাম্প। ওই টুইটের জবাবে গতকাল ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পক্ষ থেকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি টুইট করা হয়। ওই টুইটের জবাবেই আজ আবারও ফারসি ভাষায় টুইট করেন ট্রাম্প।
এর আগে ইরানের সরকারবিরোধী বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়ে গত ১১ জানুয়ারি ট্রাম্প টুইট করেন, ‘ইরানের সাহসী ও দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগী জনগণের জন্য : আমি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমার সরকারও আপনাদের পাশে থাকবে। আপনাদের বিক্ষোভকে আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং আপনাদের সাহস দেশে আমরা অনুপ্রাণিত হচ্ছি।’
ট্রাম্পের ওই টুইটের জবাবে গতকাল ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পক্ষ থেকে টুইট করা হয়, ‘মার্কিন সরকার বারবার বলছে, তারা ইরানি জনগণের পাশে আছে। তারা মিথ্যা বলছে। যদি আপনারা ইরানের জনগণের পাশেই থাকেন, তাহলে কেবল বিষাক্ত ছুরি দিয়ে তাঁদের হৃদয়ে ছুরিকাঘাত করার জন্যই আছেন। এখন পর্যন্ত আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন এবং ব্যর্থ হতেই থাকবেন।’
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি দীর্ঘ আট বছর পর গতকাল শুক্রবার রাজধানী তেহরানে জুমার নামাজের ইমামতি করেছেন। তিনি নামাজের আগে দেওয়া খুতবায় বলেন, ‘জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের সম্মান-মর্যাদায় আঘাত হেনেছে।’
খামেনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে পরাশক্তি দাবি করে দম্ভ দেখায়। আইআরজিসির ক্ষেপণাস্ত্র তাদের সেই দম্ভে আঘাত করেছে।’
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরো বলেন, ‘তারা এখন বলছে, আমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরো কঠোর করবে। কিন্তু এসবের মাধ্যমে তারা তাদের হারানো সম্মান ফিরে পাবে না।’
জেনারেল কাসেম সোলেইমানির শেষ বিদায় ও জানাজা অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি এবং মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আইন আল আসাদে আইআরজিসির হামলার প্রশংসা করে আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, ‘এ দুটি ঘটনায় শিক্ষণীয় দিক রয়েছে। এক সপ্তাহব্যাপী এসব বিশাল ঘটনাকে আড়াল করতেই তিন ইউরোপীয় দেশ ইরানের পরমাণু ইস্যুকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে।’
খামেনি আরো বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে ইউরোপীয় দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সেবক। তারা ইরানকে নতজানু করার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু ইউরোপ তো দূরের কথা, তাদের প্রভু যুক্তরাষ্ট্রও এ কাজে সফল হতে পারেনি।’