ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত আটক
ইরানে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত রব ম্যাকএয়ারকে গতকাল শনিবার আটক করে দেশটির পুলিশ। রাজধানী তেহরানের আমির কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সরকারবিরোধী একটি আন্দোলন চলাকালে তাঁকে আটক করা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা আটক রাখার পর ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, তেহরানে যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় সরকারের মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন রাষ্ট্রদূত, যা পরে আন্দোলনে রূপ নেয়। এরপর একটি সেলুনে চুল কাটানোর জন্য থামেন রাষ্ট্রদূত রব ম্যাকএয়ার। সে সময়ই তাঁকে আটক করা হয়।
এক টুইটবার্তায় ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সঙ্গে সংযুক্ত সংবাদ সংস্থা তাসনিম বলছে, ‘আমির কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি সন্দেহজনক আন্দোলন ও বিক্ষোভ সংগঠিত করার অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়। তবে এক ঘণ্টার কিছু পরই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
এদিকে ম্যাকএয়ারকে গ্রেপ্তার করা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ডমিনিক রব। এক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তেহরানে আমাদের রাষ্ট্রদূতকে কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই গ্রেপ্তার করা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
ইরানি গণমাধ্যমগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত।
গত বুধবার ভোররাতে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় বিমানটির ১৭৬ আরোহীর সবাই প্রাণ হারান। এ ঘটনার পরই বিভিন্ন সমালোচনার মুখে পড়ে ইরান। অভিযোগ ওঠে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। তবে শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল ইরান।
সর্বশেষ কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত শুক্রবার আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই বিমানটি ভূপাতিত হয়েছে। ওই বিমানে ৬৩ জন কানাডার নাগরিক ছিলেন। ফলে বিমান বিধ্বস্তের বিষয়ে কানাডায় ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিমানটি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরেও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়।
পরে গতকাল শনিবার সকালে এক বিবৃতিতে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী জানায়, মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মনে করে ‘ভুলবশত’ যাত্রীবাহী বিমানটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার কারণে এটি ভূপাতিত হয়েছে।
মার্কিন হামলায় গত ৩ জানুয়ারি ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানি নিহতের প্রতিশোধে গত বুধবার ইরাকে দুটি মার্কিন বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। সেদিনই ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবরের কিছুক্ষণ পর জানা যায়, ইউক্রেন এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট বিধস্ত হয়ে এর ১৭৬ আরোহীর সবাই মারা গেছেন।