ইরান প্রশ্নে বড় ধাক্কা খেল যুক্তরাষ্ট্র

Looks like you've blocked notifications!
জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেলি ক্রাফট। ছবি : সংগৃহীত

জাতিসংঘে ইরানের ওপর সব নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকের পর জানিয়ে দেওয়া হলো, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব খারিজ করা হচ্ছে। কারণ, অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন করেনি। জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র।

ইরান ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি ভঙ্গ করেছে, এ অভিযোগে নতুন করে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপাতে চাইছিল যুক্তরাষ্ট্র। গত ২০ আগস্ট জাতিসংঘে এ প্রস্তাব দেয় ওয়াশিংটন। যে প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এ নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব এনেছিল, তাকে কূটনৈতিক পরিভাষায় বলা হয় ‘স্ন্যাপব্যাক’। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এ প্রস্তাব পেশ করার পরই জাতিসংঘের অন্য দেশগুলো এর বিরোধিতা করে। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো কোণঠাসা করা হয়েছিল ওয়াশিংটনকে। গতকাল মঙ্গলবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় জাতিসংঘ। সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে ও সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

সিদ্ধান্ত জানানোর সময় জাতিসংঘ বলে, জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব সমর্থন করেনি। এ তিনটি দেশই ২০১৫ সালের চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গী। ফলে এই দেশগুলো প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিলে তা এমনিই খারিজ হয়ে যায়। কয়েক বছরের কূটনীতিতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে ট্রাম্পের বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘে সে বন্ধুত্বও কাজ করল না।

জাতিসংঘের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগেই যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার অর্থ হলো সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন করা। অস্ত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে এবং ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দাবি করছিল যুক্তরাষ্ট্র।

ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দাবি করাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক চাল বলেই মনে করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে নিজ দেশের ভেতরে কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়েছেন ট্রাম্প। করোনায় ট্রাম্প প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্রবাসীর একটা বড় অংশ। জনমত সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে ট্রাম্পকে খানিকটা পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। এ পরিস্থিতিতে জাতীয়তাবাদের রাস্তায় হেঁটে মানুষের সমর্থন নিজের দিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ সেখান থেকেই। 

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত বুমেরাং হয়ে গেল ট্রাম্পের জন্য। কারণ, মার্কিন জনগণের কাছে এর ফলে বার্তা গেল, শক্তিধর যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অন্য দেশগুলো খারিজ করে দিয়েছে। বিশেষ করে বন্ধু দেশগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের পাশে দাঁড়ায়নি।