ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাত-বাহরাইন চুক্তি : ‘স্তম্ভিত’ বাদশাহ সালমান
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের পর ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্থাপন নিয়ে মতানৈক্য দেখা দিয়েছে সৌদি রাজ পরিবারে। ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে আমিরাত ও বাহরাইনের পথে সৌদি আরব হাঁটবে কি না, চলমান এমন গুঞ্জনের মধ্যে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ এ বিষয়ে অসম্মতি জানিয়েছেন।
ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান আগ্রহী হলেও বাদশাহ সালমান ইসরায়েলের ব্যাপারে তাঁর আগের অবস্থানে অনড় রয়েছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাদশাহ সালমান আরব দেশগুলোর ইসরায়েল বয়কট করা ও ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবির দীর্ঘদিনের সমর্থক। তবে তাঁর উত্তরাধিকারী ক্রাউন প্রিন্স সালমান ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসা করতে এবং ওই অঞ্চলে ইরানের বিরুদ্ধে শক্তিশালী জোটবদ্ধ গড়ে তুলতে চান।
সৌদি আরবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাত ও বাহরাইনের সমঝোতা চুক্তি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ঘোষণা দেন, ৮৪ বছর বয়সী বাদশাহ সালমান তা শুনে ‘স্তম্ভিত’ হয়ে পড়েন। তবে ট্রাম্পের ঘোষণায় অবাক হননি যুবরাজ সালমান।
আরব বিশ্বের দুটি দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে যে চুক্তি করেছে তাতে সৌদি বাদশাহ আর যুবরাজের মধ্যে মতানৈক্যের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এদিকে চলতি মাসে আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে ইসরায়েলের ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তির দিনটিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্যের ভোর’ বলে আখ্যায়িত করেন।
মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশ আমিরাত, বাহরাইন ও ইসরায়েল নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রাখার চুক্তি স্বাক্ষরের অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প এমন মন্তব্য করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যস্থতাতেই এ চুক্তি সম্পন্ন হয়।
এ ছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রত্যাশা করেন, সৌদি আরবও ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে। বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, চুক্তি শেষে গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প এমন কথা বলেন।
মধ্যপ্রাচ্যের দুই আরব দেশের পদক্ষেপ সৌদিও অনুসরণ করবে কি না জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, “আমি সৌদি আরবের সঙ্গে কথা বলেছি। ‘সঠিক সময়ে’ এই সিদ্ধান্ত আসবে। এ ছাড়া সাত থেকে নয়টি দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ করবে।”
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম হওয়ার পর বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত তৃতীয় ও চতুর্থ উপসাগরীয় দেশ হিসেবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিল। এর আগে ১৯৭৯ সালে মিসর এবং ১৯৯৪ সালে জর্ডান ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল।