ইসরায়েল-গাজা দ্বন্দ্ব : সহিংসতার তদন্ত করবে জাতিসংঘ

Looks like you've blocked notifications!

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘাতের সময়কার সহিংসতার তদন্ত করার পক্ষে রায় দিয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ইসলামি দেশগুলোর আনা তদন্ত প্রস্তাবটি মানবাধিকার পরিষদে ২৪/৯ ভোটে পাস হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তদন্তের এই সিদ্ধান্ত ওই অঞ্চলকে শান্ত করার প্রক্রিয়ায় অগ্রগতিকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।  

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি এবং জাতিসংঘের ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি ইসরায়েল–হামাস সংঘাতের তদন্তের জন্য মানবাধিকার কাউন্সিলে প্রস্তাব আনে। গতকাল বৃহস্পতিবার ওই প্রস্তাবের ওপর অধিবেশনের পর ভোটাভুটি হয়। প্রস্তাবের পক্ষে ২৪টি দেশ এবং বিপক্ষে নয়টি দেশ ভোট দেয়। মানবাধিকার পরিষদের ৪৭ সদস্যের ফোরামের বাকি ১৪টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।

পরিষদের আনা প্রস্তাবে ইসরায়েল–হামাস সংঘাত তদন্তের জন্য একটি স্থায়ী তদন্ত কমিশন গঠনের কথা বলা হয়। এই কমিশন ইসরায়েল, গাজা, দখলকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার জাতিস‌ংঘ মানবাধিকার পরিষদের বিশেষ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে জাতিস‌ংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েল যে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে, তা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে এবং ইসলামপন্থি দল হামাস ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ করে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করেছে।

মিশেল ব্যাচেলেট আরও বলেন, তাঁর অফিস গাজা, পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে চলতি মাসে সহিংসতার সময় ৬৮ শিশুসহ ২৭০ ফিলিস্তিনির মৃত্যুর বিষয়টি যাচাই করেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজায় নিহত হয়েছে, যেখানে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল ১১ দিন হামলা চালিয়েছিল। অবশেষে যুদ্ধবিরতি দিয়ে এই দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে। খবর ইউরো নিউজের।

অপরদিকে, হামাসের রকেট হামলায় ১২ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন বিদেশি শ্রমিক এবং দুই শিশু রয়েছে।

অধিবেশনটি বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর অনুরোধে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তদন্ত কমিশনকে সম্ভাব্য অপরাধ তদন্তের জন্য এবং দায়িত্বশীল নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য অনুরোধ করা হয়।

জাতিস‌ংঘ মানবাধিকার কমিশনার বলেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলা, গোলাগুলি, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং সমুদ্র থেকে হামলায় বেসামরিক অবকাঠামোসহ ব্যাপক ধ্বংস সাধিত হয়েছে।

একইসঙ্গে ব্যাচেলেট বলেন, ‘নির্বিচারে’ হামাসের রকেট হামলা ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ হিসেবে বিবেচনা করা যায়।

‘ইসরায়েল দাবি করছে যে, এই অবকাঠামোগুলোর বেশিরভাগই সশস্ত্র দলগুলোর অবস্থান অথবা সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছিল, তবে আমরা এই বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাইনি,’ বলেন ব্যাচেলেট।

মানবাধিকার কমিশনার ব্যাচেলেট আরও বলেন, ‘যদি নির্বিচারে হামলার বিষয়টি জানতে পারা যায়, তাহলে ইসরায়েলের এ ধরনের হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে।’