উত্তাল দিল্লিতে কারফিউ চলাকালে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ

Looks like you've blocked notifications!

ভারতের রাজধানী দিল্লির উত্তর-পূর্ব অংশে ঠেকানো গেল না সহিংসতা। এখন পর্যন্ত দিল্লির সংঘর্ষে ১৩ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত হয়েছেন দেড়শর বেশি মানুষ। তাঁদের মধ্যে ৭০ জনের শরীরে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। দিল্লির চার এলাকায় জারি করা হয়েছে কারফিউ। সেসব এলাকায় হাঙ্গামা করলেই দেওয়া হয়েছে গুলির নির্দেশ।

উত্তর-পূর্ব দিল্লির অধিকাংশ স্থানে ১৪৪ ধারা এবং ৩৫ কোম্পানি আধাসামরিক সেনা মোতায়েন থাকলেও গতকাল মঙ্গলবার দিনভর সহিংসতা ঠেকানো যায়নি। দিনভর সংঘর্ষে তোলপাড় হয় দিল্লির বিশাল অংশ। শেষ পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব দিল্লির চারটি জায়গায় জারি করা হয় কারফিউ।

জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সারা দিনই দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় দিল্লির ভজনপুরায়। লাঠি ও রড নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে দুই গোষ্ঠীর লোকজন। চাঁদবাগে দোকানপাট ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। পুলিশ সে সময় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে দাবি এলাকার মানুষের। পুলিশের সংখ্যাও কম ছিল বলে দাবি করা হয়েছে।

তবে দিল্লির পুলিশ কমিশনার অমূল্য পট্টনায়ক বলেন, ‘হাঙ্গামাকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গণ্ডগোলের জায়গায় যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা করছে।’

এদিকে, পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় কারফিউ জারি করা হয়েছে দিল্লির চারটি জায়গায়। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সিপি প্রবীর রঞ্জন বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব দিল্লির জাফরাবাদ, মৌজপুর, চাঁদবাগ ও করাবল নগরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। সহিংসতার চেষ্টা করলেই গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।’

গতকাল বেলা বাড়তেই নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে করাবল নগর, মৌজপুর, ভজনপুরা, বিজয় পার্ক ও যমুনা বিহারের মতো এলাকায়। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির ওপরও পাথর ছোড়া হয়। কোথাও কোথাও আধাসামরিক বাহিনীর ওপর এসিড ছোড়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা যায়। মৌজপুরে একটি টোটোর যাত্রীদের নামিয়ে হামলা করা হয়। গোকুলপুরে একটি টায়ারের বাজারে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এ  পরিস্থিতিতে কোনো রকম গুজব না ছড়ানোর আহ্বান করেছেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মনিশ সিসোদিয়া। টুইট করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় গুজব ছড়ানো হচ্ছে। কোনো কিছু না দেখে বিশ্বাস করবেন না।’

এদিকে, দিল্লির সাবেক উপ-রাজ্যপাল নাজিব জং বলেছেন, ‘২৪ ঘণ্টা আগেই কারফিউ জারি করা উচিত ছিল। সত্তর হাজার পুলিশ আছে। ভিআইপি ডিউটি থেকে তাদের সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগানো হোক।’

সর্বশেষ জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে উত্তর-পূর্ব দিল্লির জাফরাবাদের রাস্তা বিক্ষোভমুক্ত করে দিল্লি পুলিশ। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনবিরোধী বিক্ষোভকারীরা গত রোববার থেকে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেছিলেন জাফরাবাদে। আরো জানা গেছে, দিল্লির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক সহিংসতার মধ্যেও একটি সড়ক থেকে বিক্ষোভকারীদের হটানো গেছে।