একুশে একটাই খেলা হবে, আমি থাকব গোলরক্ষক : মমতা
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ভোটের ভরা মৌসুমে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘একুশে একটাই খেলা হবে, আমি থাকব গোলরক্ষক। এই খেলাতে কারা হারে, আর কারা জেতে, এটা আমি দেখতে চাই।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল রোববার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা, দ্য হিন্দুস্তান টাইমস ও দ্য হিন্দু এ খবর জানিয়েছে।
মমতা বলেন, ‘আমাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া অত সহজ নয়। আর, আমাদের চোখ উপড়ে দেওয়াও অত সহজ নয়... আমাকে এই বাংলা শিখিয়েছে বীরের মতো লড়বি, বাঘের বাচ্চার মতো লড়বি।’
‘একুশেই আমরা সব চ্যালেঞ্জ একসেপ্ট করি এবং এই একুশেই (২১ ফেব্রুয়ারি) চ্যালেঞ্জ হোক। দেখি কার জোর কতাটা বেশি। একুশে (২০২১) একটাই খেলা হবে, আমি থাকব গোলরক্ষক। এই খেলাতে কারা হারে, আর কারা জেতে, এটা আমি দেখতে চাই। তার তাতে যদি আমায় সেদিন জেলেও পাঠিয়ে দেয়, আমি জেল থেকে ডাক দেব বঙ্গবন্ধুর মতো—জয় বাংলা, জয় বাংলা, জয় বাংলা, জয় হিন্দ, জয় হিন্দ বন্দে মাতরম। হারতে আমরা শিখিনি, আমরা হারব না, হারাতে আমাদের পারবে না,’ যোগ করেন মমতা।
এদিন রাজ্যের নাম পাল্টে ‘বাংলা’ করার দাবিতে ফের সরব হন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্র সরকারকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘রাজ্যের নাম বাংলা করার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। দেখতে দেখতে চার বছর হয়ে গেল। এখনওো কিছুই হলো না।’
এ ছাড়া বিজেপির নাম না নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘যাঁরা বাংলাকে সুড়সুড়ি দেন, তাঁরা কেন ভেবে দেখলেন না?’ পশ্চিমবঙ্গের নাম বাংলা করার স্বপক্ষে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যের নাম বাংলা হবে না কেন? বাংলাদেশ আছে বলে? পাকিস্তানে পাঞ্জাব আছে। তা হলে এ দেশে পাঞ্জাব থাকল কী করে? বাংলাদেশ তো একটা দেশ, আর আমরা বাংলা রাজ্যের কথা বলেছি, বা প্রদেশের কথা বলেছি। যেমন অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ আছে।’
কেন্দ্রের সরকারকে মমতার কটাক্ষ, ‘ওদের উচ্চ–মধ্য থাকতে পারে। কিন্তু বাংলার বেলায় সমস্যা।’
সবসময়ই বাংলার প্রতি বঞ্চনা হয়েছে— এমন অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন প্রশ্ন করেন, ‘বাংলাকে বঙ্গাল বলব কেন?’ মুখ্যমন্ত্রীর এই ইঙ্গিত বিজেপির সর্বভারতীয় নেতাদের দিকে। কারণ, অমিত শাহ বা জে পি নড্ডা বা কৈলাস বিজয়বর্গীয় তাঁদের বক্তব্যে বাংলাকে ‘বঙ্গাল’ বলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন অভিযোগ করে বলেন, ‘বাংলার কেউ যদি খুব বড় হয়ে যায়, তা হলে তাঁকে টেনে নিচে নামানোর চেষ্টা করা হয়। নেতাজি, রামকৃষ্ণ, রবীন্দ্রনাথকেও ছাড় দেয়নি।’
এ ছাড়া বিজেপির নাম না নিয়ে মমতার হুঁশিয়ারি, ‘কোনো ধমকানি–চমকানিতে ভয় পাই না। যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে, ধমকানি–চমকানিতে ভয় পাব না। আমাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া এত সহজ নয়।’