এবার রাশিয়ার জবাব, মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ ১০ কূটনীতিককে মস্কো ছাড়ার নির্দেশ

Looks like you've blocked notifications!
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ১০ কূটনীতিককে রাশিয়া ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে রুশ সরকার। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রাশিয়ার ১০ কূটনীতিককে মার্কিন সরকার বহিষ্কার করার ঘোষণার পর মস্কো পাল্টা এই ব্যবস্থা নিল। মার্কিন রাষ্ট্রদূতকেও দেশে ফিরে যেতে হবে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর দিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ১০ মার্কিন কূটনীতিককে বহিষ্কারের কথা জানায়। পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ও বর্তমান আটজন কর্মকর্তার ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মস্কোর দাবি, এসব কর্মকর্তা রুশ-বিরোধ নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে, মস্কোয় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন সুলিভানকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য রাশিয়া ত্যাগ করতে বলা হয়েছে।

রুশ পাল্টা পদক্ষেপের আওতায় এফবিআই পরিচালক ক্রিস্টোফার রে, ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক আরভিল হেইনেস, মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ক মন্ত্রী আলেজান্দ্রো মায়োরকাসের রাশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজন্সের পরিচালক মাইকেল কারভাজাল, ডমিস্টিক পলিসি কাউন্সিলের পরিচালক সুসান রাইস, সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন এবং সিআইএর সাবেক প্রধান রবার্ট জেমস উলসির ওপরেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে রাশিয়ায় মার্কিন তহবিল এবং এনজিও কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রুশ সরকার মনে করে এসব এনজিও’র মাধ্যমে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ওয়াশিংটন হস্তক্ষেপ করে থাকে।

অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। বাইডেনের নির্বাহী আদেশে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সাইবার অপরাধে সংযুক্ত ছয়টি রুশ কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ও অপতথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ৩২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি।

হোয়াইট হাউস বলছে, ১০ জন রুশ কুটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারাও।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, গতবছর টেক্সাসকেন্দ্রিক একটি সফটওয়্যার ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান সোলার উইন্ডসে সাইবার নিরাপত্তা যে ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে তা ছিল রাশিয়ার দিক থেকে গোপন সংবাদ সংগ্রহের একটি অংশ। বলা হচ্ছে ওই হ্যাকিং প্রক্রিয়ায় রুশ হ্যাকাররা যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত নয়টি দপ্তরকে তাদের নাগালের মধ্যে নিয়ে এসেছিল। মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করেন, ওই হ্যাকিং ছিল গোপন তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা।

এ ছাড়া গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা অভিযোগ আনেন যে,  তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাঁর পুনর্নির্বাচিত হওয়ার ব্যর্থ প্রচেষ্টায় প্রভাব ফেলে এমন তৎপরতাকে অনুমতি দিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এমন কোনো অকাট্য প্রমাণ নেই যে রাশিয়া কিংবা অন্য কেউ মার্কিন নির্বাচনের ফলাফলে কোনো পরিবর্তন আনতে পেরেছিল।