করোনাকালের শ্বেতপত্র প্রকাশ করল চীন
চীনে নভেল করোনাভাইরাসের উৎসস্থল হলেও, এখন সে দেশে তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে । বরং মহামারি করোনা বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশে চীনের চেয়েও কয়েকগুণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। করোনাভাইরাস নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছিল অনেক দিক থেকেই। এসব অভিযোগের মুখে অবশেষে দেশটিতে করোনা সংক্রমণ নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করল বেইজিং। চীনে কবে, কোথায় করোনা সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে, এ শ্বেতপত্রে সে তথ্যই প্রকাশ করা হয়েছে।
গতকাল রোববার চীনের রাষ্ট্রীয় তথ্য বিভাগ সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, করোনা সংক্রমণের প্রথম ঘটনাটি গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর উহানে সামনে এসেছিল। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া এবং মানব শরীর থেকে মানব শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা প্রথম চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি জানা যায় বলে দাবি করেছে চীন। বলা হচ্ছে, গত ১৯ জানুয়ারি একজনের শরীর থেকে অন্যের শরীরে সংক্রমণের এই ঘটনা সামনে আসার পরই তা রুখতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এ খবর জানিয়েছে।
শ্বেতপত্রে চীন জানিয়েছে, গত ২৭ ডিসেম্বর হুবেই প্রদেশের উহান শহরের একটি হাসপাতালে প্রথমবার করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত করা হয়। এরপরই বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয় সেখানকার স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ। চীন সরকারের গঠিত একটি উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গত ১৯ জানুয়ারি প্রথমবার জানায়, মানবদেহ থেকে অন্য মানুষের শরীরে করোনার সংক্রমণ ঘটতে পারে। এরপরই সংক্রমণ রুখতে যাবতীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
শ্বেতপত্রে করোনার বিরুদ্ধে চীনের লড়াইকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমত টেস্ট অব ফায়ার বা অগ্নিস্পর্শ, দ্বিতীয়ত সুসমন্বিত প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা, তৃতীয়ত ভাইরাস প্রতিরোধে শক্তিশালী বাহিনী গড়ে তোলা এবং চতুর্থত বিশ্বের সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বৈশ্বিক কার্যক্রম জোরদার করা।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ একাধিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধান অভিযোগ করেন, চীন সময়মতো তথ্য না জানানোর কারণেই গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
চীন করোনাভাইরাসের উৎসস্থল হলেও এখন তারা অনেকটাই নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে । বরং চীনের চেয়েও কয়েকগুণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, স্পেন, ইতালি, রাশিয়া ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ এখন করোনার ধাক্কা সামাল দিতে লড়াই করে যাচ্ছে। যার জেরে গোটা বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে চার লাখেরও বেশি মানুষের।
চীন দাবি করেছে, সংক্রমণের সম্ভাব্য সব পথ বন্ধ করে দিয়ে পরীক্ষা ও চিকিৎসায় ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে এমন সাফল্য অর্জন করেছে দেশটি।