করোনার চিকিৎসায় কার্যকরী ওষুধ পাওয়া গেছে, জানালেন চীনা বিশেষজ্ঞরা

Looks like you've blocked notifications!

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধ ক্লোরোকুইন ফসফেট ব্যবহার করে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় সাফল্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন চীনা বিশেষজ্ঞরা। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধ বারবার ব্যবহার করে সাফল্যের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার এমন দাবি করেন চীনা বিশেষজ্ঞরা। চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এ খবর দিয়েছে।

চীনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ডেভেলপমেন্টের উপপরিচালক সান ইয়ানরং গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানিয়ে বলেন, দ্রুতই অন্যান্য চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে এই ওষুধ ব্যবহারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সান ইয়ানরং জানান, ১০ হাজারেরও বেশি ওষুধের মধ্য থেকে ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার হয়ে আসা এই ক্লোরোকুইন ফসফেটকে বেছে নেওয়া হয়েছে। বেইজিংয়ের ১০টিরও বেশি হাসপাতালে এটির পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া চীনের গুয়ানদং ও মধ্যচীনের হুনান প্রদেশে ভালো ফল পাওয়া গেছে।

অন্যান্য ওষুধের চেয়ে এটি অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। ১০০ জনেরও বেশি করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে এই ওষুধ দেওয়ার পর কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দেয়নি।

বেইজিংয়ের ৫৪ বছর বয়সী এক নারীর শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা দেওয়ার চারদিন পর হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁকে সপ্তাহখানেক এই ওষুধ দেওয়ার পর তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়। দেখা যায়, তাঁর শরীরে নিউক্লিক অ্যাসিডের উপস্থিতি নেই।

বিশ্বখ্যাত সাময়িকী নেচারের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানানো হয়, চীনে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ৮০টিরও বেশি ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া হাজার বছরের পুরোনো আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতিতেও করোনাভাইরাস মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে।

গত মাসের শেষের দিকে জাপানি ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাবভিআই জানায়, করোনা ভাইরাসের সংকট মোকাবিলায় চীনা স্বাস্থ্য কমিশন তাদের আলুভিয়া ওষুধটি চেয়েছে। অ্যাবভিআই কোম্পানির আলুভিয়া ওষুধটি এইডস রোগীদের নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা দিলে ব্যবহার করা হয়। চীনের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান শহরের একাধিক হাসপাতালে আক্রান্তদের চিকিৎসায় এইডসের ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হচ্ছে।

তবে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে নিশ্চিত কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়নি।

গত ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ৮৬৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এই ভাইরাসে চীনে এখন পর্যন্ত ৭২ হাজার ৪৩৬ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। চীনের বাইরেও বেশকিছু দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যা দেখা দেয়।