করোনার ফলে ‘২০২৮ সালে’ যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াবে চীনের অর্থনীতি

Looks like you've blocked notifications!
পৃথিবীর বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে শুধু চীনই এ বছর তাদের অর্থনীতিকে সম্প্রসারণ করতে পেরেছে। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে ২০২৮ সালের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে চীন। এর আগে সংস্থাটি ২০৩৩ সালের কথা বলেছিল। এখন বলা হয়েছে, আগের সময়ের পাঁচ বছর আগেই এমনটি ঘটতে যাচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।

চীনের ‘দক্ষ’ কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা দেশটিকে আগামী কয়েক বছর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অর্থনীতির তুলনায় গতিশীল করতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর)। প্রতি বছর ২৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটি তাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি-অবনতির তালিকা প্রকাশ করে।

চীন সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে বড় অর্থনীতির দেশ হলেও গড়ে মার্কিনিদের চেয়ে দরিদ্র থাকবেন চীনের নাগরিকেরা। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে চারগুণ বেশি জনসংখ্যা চীনের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে বিশ্ব অর্থনীতির ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ দখলে নিয়েছে চীন। ২০২৩ সাল নাগাদ দেশটির অর্থনীতি ‘উচ্চ আয়ের অর্থনীতি’ হয়ে উঠবে।

এ ছাড়া বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত তৃতীয় সর্বোচ্চ অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে।

মহামারি করোনাভাইরাস প্রথম চীনে দেখা দিলেও তারা কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ইউরোপের মতো অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যয়কর দ্বিতীয় দফার লকডাউনে যেতে হয়নি দেশটিকে। ফলে ২০২০ সালে অন্যান্য দেশের মতো অর্থনৈতিক মন্দায় পড়তে হয়নি চীনকে। বরং দুই শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে সেখানে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে আঘাত হেনেছে মহামারি করোনাভাইরাস। সংখ্যাগুলো দেখলে বোঝা যায়। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় তিন লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। আর এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে এক কোটি ৮৫ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।

সিইবিআরের ডেপুটি চেয়ারম্যান ডগলাস ম্যাকউইলিয়ামস বলেন, ‘শুধু শুরুর দিকে করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেই চীনের অর্থনীতি লাভবান হচ্ছে, তা নয়। উন্নত উৎপাদনশীল শিল্পের পথে আগ্রাসী নীতি চীনকে এগিয়ে নিচ্ছে। তারা মনে হচ্ছে একটা পর্যায়ে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণও রাখছে আবার অন্য এলাকায় মুক্তবাজার অর্থনীতিও জারি রাখছে। প্রযুক্তির মতো খাতগুলোতে এই মুক্তবাজার নীতিই তাদের এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করছে।

এদিকে, সিইবিআরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ২০২১ থেকে ২০২৫ সালে বছরে ৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হবে এবং ২০২৬ থেকে ২০৩০ সালের অর্থবছরগুলোতে ‌১ দশমিক ৮ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হবে।

ভারত ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে পঞ্চম অর্থনীতির দেশ হয়েছে। এ বছর করোনার কারণে আবার যুক্তরাজ্যের পেছনে চলে গেছে ভারত এবং ২০২৪ সাল নাগাদ তারা আর যুক্তরাজ্যকে ছাড়াতে পারবে না বলে জানিয়েছে সিইবিআর।

প্রতিষ্ঠানটি আরো জানিয়েছে, ভারত ২০২৭ সালে জার্মানিকে এবং ২০৩০ সালে জাপানকে পেছনে ফেলবে।