করোনায় মৃত বেড়ে ১৩১৩৯, আক্রান্ত ছাড়াল তিন লাখ

Looks like you've blocked notifications!

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ১৩৯ জনে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ নয় হাজার ৩৩ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯৩ হাজার ৭৫১ জন। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বার্তা সংস্থা বিএনও নিউজ এ খবর জানিয়েছে।

এদিকে, বিশ্বের ১৮৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। নানা ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পর চীন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও ইতালি, ইরান, স্পেন, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো অনেক দেশের অবস্থা নিয়ন্ত্রণহীন।

এর মধ্যে ইউরোপে চলছে মৃত্যুর মিছিল। ইতালিতে এক প্রকার যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সরকার। চীন থেকে ইতালিতে বিশেষজ্ঞ টিম এলেও সেখানে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। একদিনের মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে যাচ্ছে অন্যদিনের সংখ্যাকে। এর মধ্যেই গত ২৪ ঘণ্টায় ইতালিতে ৭৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটিই এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর। এর ফলে ইতালিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৮২৫ জনে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩ হাজার ৫৭৮ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন করেছে ইতালির সরকার।

এদিকে করোনাভাইরাস সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে স্পেন। গত কয়েক দিনে স্পেনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন ২৫ শতাংশ হারে বেড়েছে। দেশটিতে নতুন করে ২৮৮ জনের মৃত্যু হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৮১ জনে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার ৪৯৬।

যুক্তরাজ্যে সব ক্যাফে, বার ও রেস্তোরাঁ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে যাঁরা কর্মস্থলে যোগ দিতে পারছেন না, তাঁদের বেতনের ৮০ শতাংশ সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

এ ছাড়া ইউরোপের মধ্যে জার্মানিতে ৮৪ জন মৃতের পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ২৫৫ জন। সুইজারল্যান্ডে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজার ৬৫২ জন। নেদারল্যান্ডসে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৩৬ জনের। আর আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ৬৩১ জন।

করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মধ্যেপ্রাচ্যের দেশ ইরান। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ইরানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রতি ১০ মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। ইরান সরকারের হিসাব অনুযায়ী, দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৫৬ জনে। এ ছাড়া সেখানে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ৬১০।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৩০৮ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ হাজার ২৯ জন। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে স্থানীয় সময় শনিবার রাত থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ক্যালিফোর্নিয়ার মতো ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দাদেরও বাড়িতে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া লকডাউন রয়েছে নিউইয়র্ক।

এদিকে, করোনার কোনো সংক্রমণ ছাড়া তৃতীয় দিন পার করছে ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনের উহান শহর। শুক্রবার ৪১ জনের মধ্যে এ ভাইরাস শনাক্ত করা হলেও তাঁদের কেউই উহানের বাসিন্দা নন। এ অবস্থায় উহান শহর বিশ্বের বাকি দেশগুলোকে আশার আলো দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড. টেড্রস আধানম বলেন, ‘উহানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। বিশ্বের অন্য দেশগুলোর জন্য আশা দেখাচ্ছে উহান। এমনকি এই জটিল পরিস্থিতিতেও আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারি।’

তরুণদের নিয়ন্ত্রিত চলাফেরার আহ্বান জানিয়ে টেড্রস আধানম বলেন, ‘মহামারি মোকাবিলায় তরুণরা অজেয় নয়। তরুণদের নিয়ন্ত্রিত চলাফেরা বয়স্কদের জীবন বাঁচাতে ভূমিকা রাখবে।’

এ ভাইরাসের বিস্তার রোধে শারীরিক দূরত্ব রাখা আর সন্দেহভাজনদের বেশি বেশি পরীক্ষার কোনো বিকল্প নেই বলেও মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।