করোনা নিরাময়কালে ত্বক কালো হওয়া চীনের সেই চিকিৎসক আর নেই

Looks like you've blocked notifications!

নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা করতে গিয়ে চীনের উহান শহরের কেন্দ্রীয় হাসপাতালের চিকিত্ৎ‌সক লি ওয়েনলিয়াং বেশ কিছুদিন হলো মারা গেছেন। তাঁর দুই সহকর্মী চিকিৎসক হু ওয়েইফেং ও ই ফানও আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনায়। চিকিৎসা চলাকালে দুজনেরই গোটা শরীর গাঢ় কালো হয়ে গিয়েছিল। চীনের গণমাধ্যমের বদৌলতে গত এপ্রিলে সে ছবি অনেকেই আবাক করেছিল।  জানা গেছে, গত শুক্রবার ওই দুই চিকিৎসকের একজন হু ওয়েইফেং মারা গেছেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

করোনার আঁতুড়ঘর উহানে যে চিকিৎ‌সক সর্বপ্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণের কথা প্রকাশ্যে এনেছিলেন, সেই লি ওয়েনলিয়াংয়ের দুই সহকর্মীর একজন হলেন হু ওয়েইফেং।

চীনের রাষ্ট্রীয় সিসিটিভি গতকাল মঙ্গলবার উহান হাসপাতালের ওই চিকিৎ‌সকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। অপর চিকিৎসক ই ফান অবশ্য সংকট কাটিয়ে এখন সুস্থ। একই উপসর্গ তাঁরও দেখা দিয়েছিল। সুস্থ হয়ে ওঠার পর, ধীরে ধীরে তাঁর ত্বকের রং স্বাভাবিক হয়ে আসে।

চিকিৎসক মহলের বক্তব্য, ওই দুজনের চিকিৎসা শুরু হওয়ার সময় তাঁদের যে ওষুধ দেওয়া হয়েছিল, তার জেরেই লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ত্বককে গাঢ় কালো করে তোলে। যকৃতের অবস্থার উন্নতি হলে, ত্বক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু, হু ওয়েইফেং করোনার হাত থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও ক্ষতিগ্রস্ত লিভারের কারণে ভুগছিলেন। শেষ পর্যন্ত গত শুক্রবার মারা যান উহান হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের ৪২ বছর বয়সী ওই চিকিৎ‌সক।

গত এপ্রিলে করোনার চিকিৎসা করতে নেমে নিজেরাই আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনার কথা প্রকাশ্যে আনায় লিকে শাস্তি পেতে হয় বলে অভিযোগ। পরে গত ৭ ফেব্রুয়ারি করোনাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। গত জানুয়ারিতে উহানের কেন্দ্রীয় হাসপাতালে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসার সময় গুরুতর আক্রান্ত হন লির দুই সঙ্গী ডাক্তার।

ই ফানের শারীরিক অবস্থা একসময় অত্যন্ত সংকটজনক হয়ে পড়েছিল। একটানা ৩৯ দিন কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যবস্থায় রাখতে হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে দুজনেই শিউরে উঠেছিলেন নিজেদের গায়ের রং দেখে। জানা যায়, হরমোন-সংক্রান্ত সমস্যার জেরে অস্বাভাবিক কালো হয়ে যায় তাঁদের ত্বক। ই ফান আবার একা হাঁটাচলা করার মতো অবস্থাতেও ছিলেন না। আর ওয়েইফেংয়ের শারীরিক অবস্থা হয়ে পড়েছিল আরো খারাপ। টানা ৯৯ দিনের বেশি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখেও তাঁকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা যায়নি। অবশেষে গত শুক্রবার মারা যান ওই চীনা চিকিৎ‌সক।