করোনা ব্যবস্থাপনায় ভুল পথে বহু দেশ : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
বিশ্বের বহু দেশ নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ভুল পথে হেঁটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পরিচালক টেড্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস। বিভিন্ন দেশের নেতারা বিভিন্ন রকম বার্তা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন বলেও অভিযোগ করেন ড. টেড্রস আধানম। সংশ্লিষ্ট এসব দেশের সরকার সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা না নিলে, মহামারি করোনাভাইরাস ’ভয়াবহ থেকে আরো ভয়াবহ’ হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছে ডব্লিউএইচও।
টেড্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস গতকাল ডব্লিউএইচওর করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘সোজাসাপ্টাভাবেই বলি, বহু দেশ ভুল পথে হেঁটেছে। করোনাভাইরাস জনগণের এক নম্বর শত্রু, অথচ অনেক দেশের সরকার ও জনগণের কর্মকাণ্ড দেখে তা মনেই হয় না।’
ডা. আধানম আরো বলেন, করোনা মোকাবিলায় অনেক দেশই ভুল নির্দেশনায় পরিচালিত হচ্ছে। কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে সেসব দেশে। আমেরিকা অঞ্চলের দেশগুলোই এখন করোনার হটস্পট। যুক্তরাষ্ট্রে রোগী সংখ্যা ৩৩ লাখ ছাড়িয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষের। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে মতবিরোধের সময়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে বলেও মন্তব্য করেন ডব্লিউএইচওপ্রধান। গতকাল সোমবার জেনেভায় নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি আরো বলেন, নেতৃস্থানীয়দের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যের ফলে মহামারি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে জনগণের আস্থা অর্জন করা যায়নি।
এসব কারণে অদূর ভবিষ্যতে আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান। জায়গামতোন সামাজিক দূরত্ব, হাত ধোয়া ও মাস্ক পরার বিষয়গুলোতে কড়াকড়ি আরোপ না করা হলে মহামারি শুধু সামনের দিকেই এগোতে থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কিছু জায়গায় লকডাউন তুলে নেওয়া এবং সব খুলে দেওয়ায় করোনার ’ঘন সংক্রমণ’ ঘটেছে বলে উল্লেখ করেন ডব্লিউএইচওর জরুরি স্বাস্থ্যসেবা পরিচালক ডা. মাইক রায়ান।
লাতিন আমেরিকায় এক লাখ ৪৫ হাজারের বেশি করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ সংখ্যা আরো বেশি হওয়ার কথা জানিয়েছে বিবিসি। এসব মৃত্যুর অর্ধেকই ব্রাজিলে হয়েছে। যেখানে প্রেসিডেন্ট জয়ের বোলসেনারো করোনার বিস্তার রোধে কড়াকড়ি আরোপের বিরোধী ছিলেন।
এদিকে লন্ডনের কিংস কলেজের বিজ্ঞানীরা গতকাল সোমবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, করোনা প্রতিরোধে শরীরের সক্ষমতা অল্প দিনের ব্যবধানে ফুরিয়ে বা কমে যেতে পারে। করোনা থেকে সেরে ওঠা ৯৬ জনের ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষণ চালিয়ে তারা দেখেছেন, শরীরে সৃষ্টি হওয়া অ্যান্টিবডি সপ্তাহখানেক বা এক মাসের মতো সক্রিয় থাকে।