করোনা রুখতে হাঙ্গেরির যে ফল কেনার হিড়িক
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ক্রেতারা এ বছর ব্যাপক মাত্রায় কিনছেন হাঙ্গেরির লালরঙা জাম সদৃশ ফলের রস। এত বেশি পরিমাণে কিনছেন যে ‘এলডারবেরি’ নামের এই ফলের যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সরবরাহকারীরা। জানা গেছে, মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ফলটির কার্যকারিতা অনেক হওয়ায় এতটা কাটতি এই ফলের। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এসব কথা জানানো হয়েছে।
স্থানীয়ভাবে ভেষজ ওষুধ হিসেবে হাঙ্গেরিতে দীর্ঘদিন ধরে ‘এলডারবেরি’ ফলের রসের ব্যবহার রয়েছে। এবার দেশটির কৃষকেরা বুনো ঝোপঝাড় থেকে প্রচুর ‘এলডারবেরি’ সংগ্রহ করেছেন।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, করোনাভাইরাসজনিত মহামারির আগে ফলটির ৯০ শতাংশ রস আইসক্রিম, জ্যাম ও ক্যান্ডি ইন্ডাস্ট্রিতে লাল রঙের যোগান দিতে ব্যবহার করা হতো। বাকি ১০ শতাংশের ব্যবহার হতো স্বাস্থ্যকর খাদ্যপণ্যে।
কিন্তু এবার এই ‘বুড়োজাম’ মূল্যবান ফলে পরিণত হয়েছে। বাজারদরও বেড়ে গেছে। চারগুণ বাড়তি দামে অর্থাৎ এলডারবেরির রস কেজিপ্রতি এক দশমিক ৩২ ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
ট্রায়ালে দেখা গেছে, ফলটির সিরাপ ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসায় সাহায্যকারী। বেশ কয়েকজন চিকিৎসক বলছেন, করোনাভাইরাসসহ শ্বাসকষ্টজনিত ভাইরাসের আক্রমণের পর এই ফলের রস তা থেকে রেহাই দিতে পারে। তবে এ নিয়ে আরো গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
হাঙ্গেরির সারজেন্টাগোটার এই ফল বিক্রয় সমিতির পরিচালক গিয়র্জি সিজমাডিয়া রয়টার্সকে বলেন, ‘এমন অনেক হেলথকেয়ার সাপ্লিমেন্ট প্রস্তুতকারক কোম্পানি রয়েছে যারা এ নিয়ে আগে কাজ করেনি, তারাও এবার ‘এলডারবেরি’ নিচ্ছে।’
সিজমাডিয়াসহ অন্যান্যরা এখন চাহিদা অনুযায়ী ‘এলডারবেরি’ সরবরাহ করতে পারছেন না। ছোটো ছোটো ওয়ার্কশপে বসে হাত দিয়ে ফল চিপে রস বের করায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সিজমাডিয়াসহ তাঁদের কর্মীরা।
হাঙ্গেরির চিকিৎসক এরিকা বালাসিজা ভেষজ ওষুধের ব্যবহারে বিশেষজ্ঞ। এরিকা রয়টার্সকে বলেন, ‘ভাইরাসের সংক্রমণজনিত শ্বাসকষ্ট উপশমে এই ফলের রস কার্যকর ভূমিকা নিতে সক্ষম। তবে ভাইরাসকে নষ্ট করতে পারে না। এটা শুধু চিকিৎসায় সহযোগী হিসেবে কাজ করে থাকে।’
হাঙ্গেরির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশজুড়ে ১৬ হাজার টন ‘এলডারবেরি’ উৎপাদন হয়েছিল।