কলকাতা বইমেলায় পাসপোর্টসহ দুই লক্ষাধিক অর্থ হারালেন বাংলাদেশি
বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় গিয়ে পাসপোর্টসহ দুই লাখ রুপি ও ডলার হারিয়েছেন বাংলাদেশের এক বই ব্যবসায়ী। বাংলাদেশের নাগরিক ওই বই ব্যবসায়ীর নাম মহম্মদ খায়রুল হাসান সাজু। কলকাতার কাছেই সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের ময়দানে ৪৪তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা প্রাঙ্গণে স্টল দিয়েছিলেন মহম্মদ খায়রুল। গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে খায়রুলের নিজের দিব্য প্রকাশনীর স্টলে ঘটনাটি ঘটে। তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের গাইবান্ধার নাকিহাট এলাকায়।
কয়েক বছর ধরেই কলকাতা বইমেলায় স্টল দিয়ে আসছেন খায়রুল। এবার কলকাতা বইমেলায় তিনি স্টল দিয়েছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় বই প্রকাশনী সংস্থা দিব্য প্রকাশনীর হয়ে। এই প্রকাশনীর মার্কেটিং ম্যানেজার খায়রুল হাসান সাজু। কলকাতা বইমেলার বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের ১৭ নম্বর স্টল ছিল তাঁর।
খায়রুল জানান, এবার দিব্য প্রকাশনীর পক্ষ থেকে কলকাতা বইমেলায় তিনি একাই ছিলেন। রোববার ছুটির দিন হওয়ার কারণে বইমেলায় ভিড় একটু বেশিই ছিল। খায়রুলের স্টলেও ওই দিন ভিড় ছিল। সেই ভিড়ের মধ্যে এক ক্রেতার পছদের বই খুঁজে বের করার জন্য নিজের কাঁধে থাকা ব্যাগটি স্টলের ভেতরের একটি চেয়ারে রাখেন তিনি। ওই ব্যাগের মধ্যেই ছিল তাঁর পাসপোর্টসহ দুই লাখ ভারতীয় রুপি এবং ৫০০ মার্কিন ডলার।
এরপর ক্রেতার পছন্দের বইটি খুঁজে তিনি ক্রেতাকে একটি রসিদ তৈরি করে দেন। এর মধ্যেই স্টলের মধ্যে পাশে থাকা চেয়ার থেকে তাঁর ব্যাগটি উধাও হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ব্যাগটির খোঁজ শুরু করেন। ব্যাগ চুরির কথা জেনেই মেলায় থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা ওই স্টলে থাকা বিভিন্ন ক্রেতার ব্যাগ পরীক্ষা করে দেখেন। কিন্তু খায়রুলের ব্যাগটি আর পাওয়া যায়নি।
খায়রুল আরো জানান, কলকাতা বইমেলা শেষ হওয়ার পর ১১ ফেব্রুয়ারি কলকাতার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ধারে মুকুন্দপুরের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিউরো চিকিৎসক দেখানোর কথা ছিল তাঁর। চিকিৎসার খরচসহ আনুষঙ্গিক যাবতীয় খরচের অর্থ ছিল ওই ব্যাগটির মধ্যে। কিন্তু সেই ব্যাগটি খোয়া যাওয়ায় কার্যত দিশেহারা তিনি।
ব্যাগ হারানোর পরই কলকাতা বইমেলার আয়োজক সংস্থা গিল্ড কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন খায়রুল। এ ছাড়া বইমেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমেও অভিযোগ জানান তিনি। অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় বিধাননগর উত্তর থানাতেও। পাশাপাশি পুরো বিষয়টি তিনি জানিয়েছেন কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনেও। তবে গতকাল সোমবার রাত পর্যন্ত পাসপোর্ট বা অর্থ ফেরত পাননি তিনি। যদিও বিধাননগর উত্তর থানার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, খায়রুলের হারিয়ে যাওয়া পাসপোর্ট, অর্থ বা গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের খোঁজ পেলেই তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
তবে আদৌ পাসপোর্ট ও অর্থসহ গুরুত্বপূর্ণ নথিভর্তি ব্যাগটি তিনি ফিরে পাবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহে রয়েছেন খায়রুল। তিনি বলেন, ‘রুপি ও ডলারের থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমার পাসপোর্টটি। কারণ পাসপোর্ট না পেলে বাংলাদেশে ফিরে যেতে ভীষণ অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে আমাকে।’
সোমবার বিকেলেও তিনি কলকাতায় বইমেলার স্টলে এসে বিভিন্ন স্থানে হারানো ব্যাগটির সন্ধান করেন। বইমেলার তরফেও বারবার মাইকিং করা হয় হারিয়ে যাওয়া ব্যাগটির সন্ধান পেতে। কিন্তু সোমবার রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি।