কলকাতা রেলস্টেশনে বাংলাদেশ ভিসা তথ্যকেন্দ্র চালু

Looks like you've blocked notifications!
কলকাতা রেলস্টেশনে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ভিসা তথ্যকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ উপহাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস। ছবি : এনটিভি

ভারতের কলকাতা রেলস্টেশনে চালু হলো বাংলাদেশ ভিসা তথ্যকেন্দ্র। এই প্রথম দেশটির কোনো রেলস্টেশনে বাংলাদেশের ভিসা তথ্যকেন্দ্র চালু হলো। কলকাতা রেলস্টেশনের প্রথম তলায় অবস্থিত বাংলাদেশ টিকিট রিজারভেশন কাউন্টারের পাশেই এই সেবা চালু করা হয়েছে। ব্যবসা, পর্যটনসহ বিভিন্ন কাজে বাংলাদেশে যেতে ইচ্ছুক এমন ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা আবেদন ও ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ করার লক্ষ্যেই বাংলাদেশ ভিসা তথ্যকেন্দ্রটি চালু করা হয়েছে। এই রেলস্টেশনটি চিৎপুর নামেও পরিচিত।

গতকাল সোমবার (১৩ মার্চ) তথ্যকেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের আন্দালিব ইলিয়াস। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব রেল ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার দীপক নিগম, ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা ডিইউ ডিজিটাল গ্লোবাল চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র রাই, কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের প্রথম সচিব (প্রেস) রঞ্জন সেন, কাউন্সেলর (শিক্ষা ও ক্রীড়া) রিয়াজুল ইসলাম ও কাউন্সিলর (কনস্যুলার) এ এস এম আলমাস হোসেন। 

কলকাতায় এই ভিসা তথ্যকেন্দ্র পরিচালনা করবে ডিইউ ডিজিটাল গ্লোবাল। বেসরকারি এই সংস্থাটি ইতোমধ্যে কলকাতার সল্টলেক ৫ নম্বর সেক্টরে এবং শিলিগুড়ির সেবক রোডে দুটি ভিসা আবেদন কেন্দ্র  চালু করেছে। তথ্যকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের ভিসা আবেদনসহ সব ধরনের তথ্যসেবা পাবেন ভারতীয় নাগরিকরা। ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার জন্য আগে থেকে কোনো ধরনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। এই ভিসা তথ্যকেন্দ্র পর্যায়ক্রমে ভিসার আবেদনপত্র পূরণ, ছবি তোলা, পাসপোর্ট সংগ্রহ এবং বিতরণসহ আরও একাধিক সেবা দেওয়া হবে বলে জানান কর্মকর্তারা। 

বাংলাদেশ ভিসা তথ্যকেন্দ্র চালুর এ ঘটনা দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের ক্ষেত্রে বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে একদিকে যেমন ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে ভিসা পাওয়া সহজ হবে, তেমনি ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও পর্যটন বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তারা।

বাংলাদেশ উপহাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, ‘কোভিডের পর ভারত থেকে বাংলাদেশ কিংবা বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসার যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে। দুদেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বেড়েছে। ফলে বাংলাদেশে যারা যাতায়াত করেন, তাদের যাতে তথ্য পেতে সুবিধা হয়, সেজন্যই এই তথ্য কেন্দ্রটি খোলা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই যারা বাংলাদেশে ভ্রমণ করতে চান, তারা এখান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদন করতে পারবেন।’

পূর্ব রেল ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার দীপক নিগম বলেন, ‘কলকাতা থেকে রেলপথে বাংলাদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে কলকাতা স্টেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই কলকাতা স্টেশন থেকেই চলাচল করে কলকাতা-ঢাকা ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’ এবং কলকাতা-খুলনা ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’। ফলে এই স্টেশনের গুরুত্ব অনেক। আর সেই গুরুত্ব কথার মাথায় রেখে এই ভিসা তথ্যকেন্দ্রটি চালু করা হয়েছে।’  

কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের কাউন্সিলর (কনস্যুলার ভিসা) এ এস এম আলমাস হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে ভ্রমণ করতে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয় নাগরিকদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সেক্ষেত্রে একজন ভিসা প্রার্থী যাতে দ্রুত প্রয়োজনীয় সব নথি জমা দিয়ে ভিসা সংগ্রহ করতে পারেন, সেই ব্যাপারে তথ্য প্রদানে সহায়তা করবে এই ভিসা তথ্যকেন্দ্রটি।’ 

আলমাস আরও বলেন, ‘কোভিড পরবর্তী ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ যেতে টুরিস্ট ভিসা চালুর পর থেকেই ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি মাসে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ হাজার ভিসা দেওয়া হচ্ছে। গত বছর প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার ভারতীয় নাগারিককে বাংলাদেশের ভিসা দেওয়া হয়েছে। তাদের অধিকাংশই পর্যটক।’