কাগজের কাপে এবার আড্ডা জমছে কলকাতার কফি হাউসে
করোনা আবহের মধ্যে কড়া নিয়মের ঘেরাটোপে খুলে গেল কলকাতার ঐতিহ্যবাহী কফি হাউস। দীর্ঘদিনের বদ্ধ জীবন থেকে মুক্ত হয়ে এবার থেকে আর সাজানো-গোছানো কাপ-প্লেটে নয়, কাগজের কাপেই চুমুক দিয়ে আড্ডা ফিরছে কফি হাউসে।
করোনা ঠেকাতে লকডাউনের জেরে প্রায় টানা ১০১ দিন ধরে বন্ধ ছিল কফি হাউস। বাঙালির চিরন্তন আড্ডার ঠিকানা কলকাতার কলেজ স্ট্রিটপাড়ার কফি হাউস। করোনার কারণে বাঙালির এই অন্যতম আড্ডাস্থল বন্ধ থাকায় কার্যত হাঁপিয়ে উঠেছিলেন আড্ডাবাজ বাঙালি। অবশেষে কড়া নিয়মকানুনের মধ্য দিয়েই খুলে গেল কফি হাউস।
এখন থেকে প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কাগজের কাপে চুমুক দিতে দিতে ফের স্বাভাবিক আড্ডা জমে উঠবে ঐতিহ্যবাহী এই কফি হাউসে। অবশ্য কফি হাউস খুললেও করোনা আতঙ্ক এখনো যায়নি, তাই তো কফি হাউসের বাইরে থেকে কর্তৃপক্ষ নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে, 'নো মাক্স, নো এন্ট্রি।' ভেতরের দেয়ালে লেখা রয়েছে, 'কঠোরভাবে মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব।' তাই আপাতত কফি হাউসে সবাই গোল করে ১০ থেকে ১২ জনের একসঙ্গে বসার সুযোগ নেই।
কফি হাউস কর্তৃপক্ষের কড়া নির্দেশ, একটি টেবিলে মাত্র দুজন বসতে পারবেন। কাচের গ্লাস, স্টিলের চামচ, চিনেমাটির সাদা কাপ, প্লেটও আপাতত বিদায় নিয়েছে। করোনার কারণে এখন শুধুই কাগজের কাপ। টেবিলে টেবিলে আর মেন্যু লিস্ট নেই। মেন্যু লিস্টের ফিরিস্তি সাঁটানো রয়েছে দেয়ালে।
তবে কফি হাউসের কফির স্বাদ কিন্তু একই আছে, সেইসঙ্গে পাকোড়া, স্যান্ডউইচ, ওমলেট, টোস্ট সবই আছে; কিন্তু সেসব পাওয়া যাবে শুধু কাগজের প্লেটেই। ইন্ডিয়ান কফি হাউস ওয়ার্কাস কোঅপারেটিভ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি অনুযায়ী খাবারের দাম বাড়তে পারে।
কর্তৃপক্ষ আরো জানিয়েছে, করোনার জন্য কফি হাউসে মানুষ না এলে বিক্রি হবে না। ফলে তখন কর্মচারীদের বেতন দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে। যে কারণে দাম বাড়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গত বৃহস্পতিবার লকডাউনে বন্ধ থাকার পর প্রথম কফি হাউস খুলতেই বেশ কিছু আড্ডাবাজ মানুষের ভিড় জমে কফি হাউসে। এর পর থেকে প্রতিদিন কমবেশি হলেও আড্ডাবাজ মানুষের ভিড়ে একটু একটু করে হলেও কিছুটা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে কলকাতার কফি হাউস।