কানাডায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সেই গ্রামে তীব্র দাবানল

Looks like you've blocked notifications!
কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ব্রিটিশ কলোম্বিয়ার লিটন গ্রামের ৯০ শতাংশই পুড়ে গেছে। ছবি : রয়টার্স

তীব্র দাবানলে কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ব্রিটিশ কলোম্বিয়ার লিটন নামের একটি গ্রামের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এই গ্রামেই সম্প্রতি দেশটির মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্র্যাড ভিসের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি আজ শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।

ব্র্যাড ভিস বলেন, ‘দাবানলে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার লিটনসহ আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

অন্যদিকে, লিটনের মেয়র জ্যান পোলডারম্যান বিবিসিকে বলেছেন, তিনি সৌভাগ্যবান যে, ওই এলাকা থেকে নিজের জীবন নিয়ে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন। তিনি বলেন, ‘লিটনে আর বেশি কিছু অবশিষ্ট থাকবে না। সেখানে সর্বত্রই আগুন জ্বলছে।’ এর আগে তিনি ওই এলাকা থেকে স্থানীয়দের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই আগুনের শিখা ছড়িয়ে পড়েছে।

চলতি সপ্তাহে গ্রামটিতে দেশটির সর্বোচ্চ ৪৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২১.৩ ফারেনহাইট) তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এ ছাড়াও উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন এলাকায় অস্বাভাবিক তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে, তীব্র তাপদাহে কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় পাঁচদিনে ৪৮৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দেশটির ওই প্রদেশে তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়ছেই। এ কারণে বয়স্ক মানুষদের নিয়ে উদ্‌বেগ বাড়ছে। কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান ও আল জাজিরা।

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার চিফ (প্রধান) লিসা লাপোয়েন্তে বুধবার সন্ধ্যায় বলেছেন, ব্রিটিশ কলম্বিয়া (বিসি) করোনার্স সার্ভিস শুক্রবার থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত ৪৮৬ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছে। মৃত্যুর এই সংখ্যাটি বাড়বে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

এক বিবৃতিতে লিসা লাপোয়েন্তে বলেছেন, ‘ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় গত পাঁচদিন বিসি করোনার্স সার্ভিসে নজিরবিহীন মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না যে এদের মধ্যে কতজনের মৃত্যু তাপদাহজনিত। যদিও এটি বিশ্বাসযোগ্য যে, মৃতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির জন্য ব্রিটিশ কলম্বিয়ার প্রতিকূল আবহাওয়াই দায়ী।’

কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়াসহ পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে সম্প্রতি তাপমাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এর জন্য ‘হিট ডোম’ বা উষ্ণ বাতাসে আবদ্ধ আবহাওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। তবে হঠাৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রয়েছে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রা বাড়ার পেছনে বড় ভূমিকা রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের। কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কেন্দ্রীয় শহর লিটনে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে ৪৯ দশমিক ৬ সেলসিয়াস (১২১.২৪ ফারেনহাইট) তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। ভ্যানকুভারের পুলিশ সার্জেন্ট স্টিভ অ্যাডিসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা এর আগে কখনও এমন দেখিনি। এমন অবস্থায় আমরা মর্মাহত।’