কাশ্মীরে তুষারধস : ১৮ ঘণ্টা পর তুষারের নিচ থেকে উদ্ধার শিশু
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/01/16/kashmir_avalanche2.jpg)
মেয়েকে জীবিত ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন সামিনার মা শাহনাজ বিবি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে শাহনাজ বলেন, ‘আমরা বরফ গড়িয়ে পড়ার কোনো শব্দই পাইনি। চোখের পলকে পুরো ব্যাপারটি ঘটে গেল।’
তুষারধসের নিচে ১৮ ঘণ্টা আটকে থাকার পর জীবন্ত উদ্ধার করা হলো ১২ বছরের সামিনা বিবিকে। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে বাড়ি সামিনাদের। সামিনার মা শাহনাজ বিবি জানান, তাঁদের বাড়ির ওপর আছড়ে পড়েছিল বিপুলাকায় হিমবাহ। তাতে বরফের নিচে চাপা পড়ে সামিনাদের বাড়ি। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের নীলম উপত্যকায় গত সোমবারের তুষারধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৪। এখনো উদ্ধারকাজ চলছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।
তুষারের মধ্যে আটকা পড়ে অসহায়ের মতো সাহায্য চেয়ে একটানা চিৎকার করে গেছে সামিনা। উদ্ধার হওয়ার পর সে অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছে সামিনা। জানা গেছে, সামিনাসহ আরো অনেককে তুষারধসে আক্রান্ত এলাকা থেকে আকাশপথে মুজাফফরাবাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সামিনা বলে, ‘ভেবেছিলাম মরেই গেছি।’ তুষারধসে সামিনার পা ভেঙেছে, মুখ দিয়ে গলগল করে রক্ত পড়েছে। উদ্ধার হওয়ার নির্ঘুম সময় কেটেছে সামিনার।
মেয়েকে ফিরে পাওয়াটা অলৌকিক মানছেন সামিনার মা শাহনাজ বিবি। জানালেন, বরফের নিচ থেকে বেরিয়ে তিনি ও তাঁর ভাই ভেবেছিলেন মেয়েকে আর জীবিত ফিরে পাবেন না। তবে সামিনাকে ফিরে পেলেও তুষারধসে এক ছেলে ও এক মেয়েকে হারিয়েছেন শাহনাজ।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, পরিবার ও গ্রামের আরো কয়েকজনকে নিয়ে তিনতলা বাড়িতে ছিল সামিনারা। হঠাৎ হিমবাহ নেমে এলে তুষারধসে চাপা পড়ে সামিনাদের বাড়ি।
পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বরফ-আক্রান্ত ওই এলাকায় অন্তত ১০০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
এ ছাড়া ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের গণমাধ্যমসূত্রের খবর, তুষারপাতে সেখানে আটজন নিহত হয়েছেন।
প্রায় ৮৬ হাজার বর্গমাইল বিস্তৃত কাশ্মীরকে বলা হয় ভূস্বর্গ। নয়নাভিরাম হ্রদ, ঘাস, ফুলেল গুল্ম-লতা ও তুষারাচ্ছাদিত পর্বতশৃঙ্গের জন্য বিখ্যাত এই হিমালয় উপত্যকা।
কিন্তু ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে ভারত ও পাকিস্তানের জন্ম হওয়ার পর থেকে কয়েক দশক ধরে এই উপত্যকা অঞ্চলে চলছে প্রাণঘাতী সংঘাত ও সংকট।