কৃষকদের সমর্থনে মোদির মন্ত্রিসভা থেকে অকালি নেত্রীর পদত্যাগ

Looks like you've blocked notifications!
হার্সিম্রাত কউর বাদল। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থন করে নরেন্দ্র মোদি সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিলেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হার্সিম্রাত কউর বাদল। তিনি বিজেপির অন্যতম পুরোনো শরিক দল শিরোমণি অকালি দলনেতা এবং পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদলের পুত্রবধূ। এর মধ্যেই পাঞ্জাব ও হরিয়ানার হাজার হাজার কৃষক মোদি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে পথে নেমেছেন। কৃষকদের এ আন্দোলনকে সমর্থন করেই ইস্তফা দিলেন হরসিমরত।

ভারতের পার্লামেন্টের চলতি অধিবেশনে তিনটি অর্ডিন্যান্স পাস করাতে চাইছে মোদি সরকার। যার মধ্যে রয়েছে কৃষিপণ্যের বাণিজ্য সংক্রান্ত অধ্যাদেশ, কৃষি পরিষেবা ও কৃষিপণ্যের মূল্যের নিশ্চয়তা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন সংশোধন অধ্যাদেশ। ভারত সরকার জানিয়েছে, এই তিনটি অধ্যাদেশ মূলত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করবে। এর ফলে কৃষকরা নিজেদের পণ্য অন্য রাজ্যে বিক্রি করার সুযোগ পাবে।

বর্তমানে ভারতে চাল, গমসহ বেশকিছু কৃষিপণ্য নিজেদের রাজ্যের বাইরে বিক্রি করতে পারে না কৃষকরা। পাশাপাশি, এই অধ্যাদেশের ফলে কৃষকরা বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে কৃষিপণ্য উৎপাদন করতে পারবে। কিন্তু, ভারতের বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের বক্তব্য, এই তিনটি অধ্যাদেশ তাদের স্বার্থবিরোধী। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা।

ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা সাহাব সিংয়ের দাবি, এই অধ্যাদেশ আইনে পরিণত হলে ভারতে কৃষি ব্যবস্থার সর্বনাশ ঘটে যাবে। তাই এই অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এদিকে এই অধ্যাদেশের বিরোধীতা শুরু করেছে দেশটির বহু ফড়িয়া। তাদের আশঙ্কা, এই অধ্যাদেশ আইনে পরিণত হলে ফড়িয়াদের সঙ্গে বিপুল মজুর ও পরিবহনকর্মী কাজ হারাবে।

এদিকে, ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যখন এই তিনটি অধ্যাদেশ পাস হয়, তখন সেগুলোকে সম্মতি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী হার্সিম্রাত কউর। বিলের পক্ষে মত দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে কৃষকদের অসন্তোষ দেখে এখন সুর বদলেছেন হাতিনি। অন্যদিকে, ভারতে কংগ্রেসসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো কৃষকদের আন্দোলনে সমর্থন জানাতে শুরু করেছে।

ভারতের পাঞ্জাব রাজ্য কৃষিপ্রধান রাজ্য। ফলে সেখানে ক্ষতির আশঙ্কাতেই হার্সিম্রাত এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে ভারতের কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার জানিয়েছেন, কৃষকদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। কৃষকরা সরকারের থেকে যে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পায়, তা বহাল থাকবে। সরকার কৃষকদের কাছ থেকে কৃষিপণ্য কিনবে। তবে সরকারের মূল লক্ষ্য হলো, কৃষকরা যাতে কৃষিপণ্যের আরো ভালো দাম পায়।