ট্রাম্পের অভিশংসন

কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় : ন্যান্সি পেলোসি

Looks like you've blocked notifications!
হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি স্থানীয় সময় বুধবার বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসনের কথা জানান। ছবি : সংগৃহীত

দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে অভিশংসিত হয়েছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি স্থানীয় সময় বুধবার ট্রাম্পের অভিশংসনের কথা জানিয়ে বলেছেন, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’ বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

বেপরোয়া রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ১৩ মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা অভিশংসিত হওয়ার পর ন্যান্সি পেলোসি এ বিষয়ে কথা বলেন।

এক অনুষ্ঠানে কংগ্রেসের শীর্ষ ডেমোক্র্যাট ন্যান্সি পেলোসি বলেন, ‘দ্বি-দলীয় এই হাউসে আজ দেখা গেছে যে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও নন।’ ওই অনুষ্ঠানে ন্যান্সি অভিশংসনপত্রে স্বাক্ষর করেন।

গত ৬ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেস ভবনে নজিরবিহীন হামলার ঘটনায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের মদদ ছিল অভিযোগ করে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে গত সোমবার অভিশংসন প্রস্তাব আনেন ডেমোক্র্যাটরা। এই অভিশংসনের পক্ষ নেন একাধিক রিপাবলিকান সদস্যও।

হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি আরো বলেছেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট আমাদের দেশের বিরুদ্ধে (ক্যাপিটলে) এই সহিংসতাকে, এই সশস্ত্র হামলাকে উসকে দিয়েছিলেন। তাঁর অবশ্যই চলে যাওয়া উচিত। তিনি পরিষ্কারভাবে এবং বর্তমান সময়ে আমাদের রাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক, যে রাষ্ট্রকে আমরা ভালোবাসি।’

মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল অভিমুখে মিছিলসহ যেতে ট্রাম্প তাঁর সমর্থকদের আহ্বান জানানোর পর বিদ্রোহমূলক কর্মকাণ্ডে মদদ দেওয়ায় ৭৪ বছর বয়সী ট্রাম্প অভিশংসিত হন।

এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন আইনসভার নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে অভিশংসিত হলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনো প্রেসিডেন্ট দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসিত হলেন। মার্কিন কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে অভিশংসিত হয়েছেন ট্রাম্প।

ডেমোক্র্যাট অধ্যুষিত হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে স্থানীয় সময় বুধবার ট্রাম্পকে অভিশংসনের পক্ষে ২৩২টি ভোট পড়ে। অন্যদিকে, বিপক্ষে পড়ে ১৯৭টি ভোট। এর মধ্যে ১০ জন রিপাবলিকান ট্রাম্পকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন।

এর আগে ২০১৯ সালে ট্রাম্পকে অপসারণে নিম্নকক্ষে অভিশংসন প্রস্তাব পাস হয়। তবে উচ্চকক্ষ সিনেটের রায়ে তা বানচাল হয়ে যায়। মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, হাউস সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন পেলে প্রেসিডেন্ট অভিশংসিত হবেন। কিন্তু, প্রেসিডেন্টকে হোয়াইট হাউস ছাড়া করতে সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশের সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়।

এদিকে, ট্রাম্প এখন সিনেটে দোষী সাব্যস্ত হবেন কি না, সেটিই দেখার বিষয়। ট্রাম্পের অভিশংসনের পক্ষে খোলাখুলি অবস্থান না নিলেও তাঁর পদত্যাগ কিংবা অপসারণকে সমর্থন করছেন বেশ কয়েকজন সিনেটর। তবে, সিনেটে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করতে হলে ডেমোক্রেটিক পার্টিকে ১৭ জন রিপাবলিকান সিনেটরের ভোট পেতে হবে।

গত ৬ জানুয়ারি জো বাইডেনের বিজয় কংগ্রেসে অনুমোদনের দিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে হামলা চালায় ট্রাম্প সমর্থকেরা। এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়। সেদিন ৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আরো বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।