কোভিড-১৯ প্রতিরোধযোগ্য মহামারি ছিল : গবেষণা

Looks like you've blocked notifications!

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একটি স্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল তাদের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছে, ‘কোভিড-১৯ প্রতিরোধযোগ্য মহামারি ছিল। ডব্লিউএইচও এবং সদস্য দেশগুলোর সরকারের অবহেলায় এটি ছড়িয়ে পড়েছে। ডব্লিউএইচও যখন আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি করে, তার আরও আগেই এটি জারি করা উচিত ছিল।’ 

এরই মধ্যে পৃথিবীর প্রায় ৩৪ লাখ মানুষ এই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অনেক দেশ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ায় ভাইরাসটি এখনও ব্যাপক দাপট বজায় রেখেছে।

ডব্লিউএইচও’র বিশেষজ্ঞ দল দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্যানেল ফর প্যান্ডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স বলছে, ‘রোগের প্রাদুর্ভাবের তদন্তের জন্য বিশ্বব্যাপী একটা ব্যবস্থা তৈরি করা উচিৎ। একইসঙ্গে ডব্লিউএইচওকে নোটিশে তদন্তকারী মোতায়েন করা ও তাদের ফলাফল প্রকাশের ক্ষমতা দেওয়া উচিৎ।’

১৩ জন স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত দলটি মহামারি পরিস্থিতি পরিচালনায় ক্ষেত্রে ডব্লিউএইচও’র ভূমিকার সমালোচনা করে। পর্যালোচনায় বলা হয়, ‘চীনের চিকিৎসকেরা ২০১৯ সালের ডিসেম্বরেই অস্বাভাবিক নিউমোনিয়ার কথা জানিয়েছিল। তাইওয়ানের ডব্লিউএইচওর রোগ নিয়ন্ত্রক কেন্দ্র থেকেও সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল। তারপরও অপেক্ষা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২২ জানুয়ারির সভার পরিবর্তে ৩০ জানুয়ারির সভায় আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল সংস্থাটি। কিন্ত তখনও ভ্রমণের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি সংস্থাটি। অথচ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে মহামারির ওই ভয়ংকর প্রাদুর্ভাব এড়ানো যেত।’

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস ছিল। সেই সময় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে মহামারি প্রতিরোধ করা যেত। কিন্তু তা হয়নি।

বিশেষজ্ঞ প্যানেলের কো-চেয়ার এবং নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্ক বলেছেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আরও শক্তিশালী ভূমিকা খুবই জরুরি ছিল। আরও দ্রুত এবং ব্যাপকভাবে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে বিশ্বব্যাপী এত দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারতো না। আজকের মত কঠিন পরিস্থিতিও দেখতে হতো না।’

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের অপর কো-চেয়ার ও লাইবেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জনসন সেরলিফ বলেছেন, ‘আজ আমরা যে অবস্থায় আছি, এটা ঠেকানো যেতো। মহামারি মোকাবিলার প্রস্তুতি ও পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে পাহাড়সম ব্যর্থতা, সমন্বয়হীনতা ও ধীরগতির কারণে এ অবস্থায় পড়তে হয়েছে আমাদের।’