কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে সুইডেনে সহিংস বিক্ষোভ
সুইডেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় মালমো শহরে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআনের অবমাননার প্রতিবাদে শত শত মানুষ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জের ধরে অন্তত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে।
সুইডেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর মালমোতে কোরআন পোড়ানোর এক ঘটনার জেরে শহরের ক্ষুব্ধ মুসলিমরা সহিংস বিক্ষোভ করেছেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
মালমোর অভিবাসী অধ্যুষিত রোজেনগার্ড শহরতলীতে গত শুক্রবার উগ্র ডানপন্থি ইসলাম বিদ্বেষীরা পবিত্র কোরআনে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পর সেখানকার অভিবাসী অধিবাসীরা এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সুইডেনের পুলিশ বলছে, প্রায় ৩০০ মানুষ প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিল।
গত শুক্রবার রাতে ওই বিক্ষোভের সময় কিছু তরুণ গাড়িতে আগুন দেন এবং পুলিশের দিকে ইট পাটকেল ছোড়েন।
সুইডেনের প্রতিবেশী দেশ ডেনমার্কের উগ্র ডানপন্থি ও অভিবাসীবিরোধী নেতা রাসমোস পালুদান গত শুক্রবার সুইডেনের মামলো শহরের কোরআন অবমাননার ঘটনায় অংশ নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সুইডেনের পুলিশ ওই শহরে প্রবেশের আগেই তাঁকে আটক করে ডেনমার্কে পাঠিয়ে দেয়। পালুদান এর আগে ডেনমার্কে কোরআন অবমাননার ঘটনায় জড়িত ছিলেন। সুইডিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, দুই বছরের জন্য পালুদানের সুইডেনে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
ডেনমার্কের ওই উগ্র ইসলামবিদ্বেষী নেতা এর আগে পবিত্র কোরআনের অবমাননা করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
রাসমুস পালাদুন কট্টর দক্ষিণপন্থী স্ট্রাম কুর্স দলের নেতা। ডেনমার্কে বর্ণবাদ এবং অন্যান্য অপরাধে তাঁকে এক মাসের জেল দেওয়া হয়েছিল। পালাদুনের দলের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চ্যানেলে ইসলামবিরোধী ভিডিও পোস্ট করার অভিযোগে তাঁর সাজা হয়।
সুইডেনের স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, গত শুক্রবার কোরআন অবমাননার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
সুইডেনের মালমোতে বসবাস করেন বাংলাদেশি সাংবাদিক তাসনীম খলিল। তিনি জানান, রাসমুস পালাদুনের অনুসারীরাই কোরআন পুড়িয়েছে বলে ধারণা করা যায়।
তাসনীম খলিল জানান,একটি সাইকেল চালানোর রাস্তায় গোপনে এপালাদুনের অনুসারীরা কোরআন পুড়িয়েছে। এ ঘটনাটি তারা নিজেরাই ভিডিও করেছে। এরপর তারা এটি একটি ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে।
তাসনীম খলিল বলেন, যারা এ কাজ করেছে, তারা এর পক্ষে একটি হাস্যকর যুক্তি দিচ্ছে। তারা বলছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য তারা এ কাজ করছে। অথচ সুইডেনের আইন অনুযায়ী এটা বেআইনি, কারণ এর মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষের প্রতি ঘৃণার ছড়ানো হচ্ছে।