গত বছর নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলা করে ৫১ জনকে হত্যায় অভিযুক্ত ব্রেন্টন ট্যারান্টকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের একটি আদালত। সাজাপ্রাপ্ত ব্রেন্টন ট্যারান্টের প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকছে না। এই প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডে প্যারোল ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হলো। ক্রাইস্টচার্চ হাইকোর্টের বিচারক ক্যামেরন ম্যানডার আজ বৃহস্পতিবার এ দণ্ডাদেশ দেন।

দণ্ডাদেশ দেওয়ার সময় বিচারক ক্যামেরন ম্যানডার মন্তব্য করেন, ব্রেন্টন ট্যারান্ট পরিকল্পিতভাবে দুটি মসজিদে হামলা করে এবং সে তার কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত নয়। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

গত বছরের ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদ ও লিনউড ইসলামিক সেন্টারে বন্দুক নিয়ে গুলো করতে শুরু করে হামলাকারী ট্যারান্ট। গুলি করার দৃশ্য সে সরাসরি অনলাইনে সম্প্রচার করে।

গত বছরের ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে বন্দুক হামলা চালিয়েছিল ব্রেন্টন ট্যারান্ট। ছবি : সংগৃহীত

চারদিনের শুনানি শেষে রায়

ব্রেন্টন ট্যারান্টের বিচারের শুনানি চলে চারদিন ধরে এবং এ সময় ৬০ জনের বেশি ভুক্তভোগীর বক্তব্য শুনেছেন আদালত। শুনানির শেষদিন আজ বৃহস্পতিবার আদালতে কোরান তিলাওয়াত করা হয় এবং হামলায় নিহতদের ছবি দেখানো হয়।

আজ সাজা শোনানোর আগে বন্দুকধারী ব্রেন্টন ট্যারান্টকে কথা বলার সুযোগ দেন আদালত। কিন্তু, ট্যারান্ট কোনো কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায়।

কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের কারণে আদালত কক্ষ প্রায় খালিই ছিল। তবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভিডিও ফিডের মাধ্যমে ক্রাইস্টচার্চ শহরের হাজার হাজার মানুষ আদালতের কার্যক্রম দেখেছে।

ধূসর রঙের পোশাক এবং তিনজন পুলিশ কর্মকর্তার বেষ্টনিতে ব্রেন্টন ট্যারান্ট রায় ঘোষণার পুরো সময় চুপচাপ ছিলেন বলে জানা যায়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বার্নাবি হাওয়েজ আদালতকে বলেছেন, ক্রাইস্টচার্চে ওই হামলার জন্য বন্দুকধারী ট্যারান্ট বহু বছর ধরে পরিকল্পনা করছিল। তার উদ্দেশ্য ছিল ‘'যত বেশি সম্ভব মানুষকে হতাহত করা।’

গত বছর নিউজিল্যান্ডের ওই দুটি মসজিদে হামলা করে ৫১ জনকে হত্যা করে ব্রেন্টন ট্যারান্ট। হামলা থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সফররত সদস্যরা।

সাধারণত সর্বাধিক ১৭ বছর পর্যন্ত কারাবাসের সাজা হয় নিউজিল্যান্ডে। ব্রেন্টনের রায়ের ক্ষেত্রে এই প্রথম গতানুগতিকের চেয়েও কড়া সাজা শোনালেন নিউজিল্যান্ডের আদালত। এই প্রথম সারা জীবনের জন্য কাউকে কারাবাসের সাজা শোনানো হলো। কারাবাসকালে প্যারোলেও মুক্তি পাবে না ব্রেন্টন ট্যারান্ট।