ক্ষমতা দখল করে প্রেসিডেন্টকে আটক করল গিনির সেনাবাহিনী
আফ্রিকার দেশ গিনিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশব্যাপী কারফিউ জারি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। তারা দেশটির প্রেসিডেন্ট আলফা কন্ডেকে আটক করে রেখেছে এবং সংবিধান বাতিল করে সরকার ভেঙে দিয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স ২৪ এ খবর জানিয়েছে।
গিনির সেনাবাহিনীর স্পেশাল ফোর্সের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মামাদি দুমবোয়ার নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সৈন্য পরিবেষ্টিত ইউনিফর্ম পরা একজন সেনা কর্মকর্তাকে একটি ভিডিওতে বলতে শোনা গেছে, ‘প্রেসিডেন্টকে আটকের পর আমরা সংবিধান বাতিল ও সরকার ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ এএফপি’র একটি ভিডিওর বরাত দিয়ে ফ্রান্স ২৪ এ তথ্য জানিয়েছে। সেনা কর্মকর্তা আরও জানান, গিনির স্থল ও আকাশ সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী কারফিউ বলবৎ থাকবে বলেও পরে এক বিবৃতিতে বলা হয়।
পশ্চিম আফ্রিকার দরিদ্র দেশ গিনিতে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে কর্নেল মামাদি অভিযোগ করেন, প্রেসিডেন্ট কন্ডে রাজনীতিকে নিজের সম্পত্তিতে পরিণত করেছিলেন। তিনি দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য কিছুই করেননি।
কর্নেল মামাদি বলেন, ‘আমরা আর এক ব্যক্তির রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। আমরা জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চাই।’
‘গিনি সুন্দর। একে নিপীড়ন করার দরকার নেই। আমাদের প্রয়োজন দেশকে ভালোবাসা’, যোগ করেন কর্নেল মামাদি।
গত বছর সহিংসতাপূর্ণ নির্বাচনে ৮৩ বছর বয়স্ক কন্ডে তৃতীয় বারের মতো গিনির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর গিনির এই সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, গিনিকে সমর্থনে মার্কিন সক্ষমতার একটা সীমা রয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস টুইটারে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে কন্ডেকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ ছাড়া ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ডি. আর কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স তিশেকেদিও অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে কন্ডেকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, ফ্রান্স ২৪-এর এক সংবাদদাতাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কর্নেল মামাদি দুমবোয়া বলেছেন : ‘এই দেশকে গড়তে সাহায্য করার জন্য পুরো সেনাবাহিনী এখানে হাজির রয়েছে।’
কর্নেল মামাদি দুমবোয়া আরও জানান, গিনির সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টকে তাঁর লোকজন আটকে রেখেছে।
‘প্রেসিডেন্ট আমাদের কাছে আছেন। তিনি একটি নিরাপদ স্থানে আছেন। একজন চিকিৎসক তাঁকে দেখেছেন, কোনো সমস্যা নেই’, যোগ করেন কর্নেল মামাদি দুমবোয়া।