চলে গেলেন বিশ্বের হাঁটতে সক্ষম ক্ষুদ্রতম মানুষ
চলে গেলেন বিশ্বের অন্যতম ক্ষুদ্রকায় মানুষটি। হাঁটাচলা করতে সক্ষম সবচেয়ে ক্ষুদ্রকায় ব্যক্তি হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখানো নেপালের খগেন্দ্র থাপা মাগার (২৭) গতকাল শুক্রবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
নেপালের বাগলুনা শহরের বাসিন্দা খগেন্দ্র থাপার উচ্চতা ছিল ৬৭ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার বা দুই ফুট চার ইঞ্চির সামান্য বেশি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
খগেন্দ্রর ভাই মহেশ থাপা মাগার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিউমোনিয়ার সঙ্গে লড়ছিলেন বিশ্বের ক্ষুদ্রতম মানুষটি।
এদিকে খগেন্দ্র মৃত্যুতে শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বার্তা প্রকাশ করেছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ। ওই বার্তায় বলা হয়, খগেন্দ্র থাপা মাগার ‘ক্ষুদ্রাকৃতির কারণে নিজের জীবনটা উপভোগ করা থামাননি’।
২০১০ সালে খগেন্দ্র তাঁর ১৮তম জন্মদিনে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রকায় ব্যক্তির স্বীকৃতি পান। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে আয়োজিত ওই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে খগেন্দ্র বলেছিলেন, ‘আমি নিজেকে ছোট মানুষ মনে করি না। আমি একজন বড় মানুষ। আজ যে উপাধি আমাকে দেওয়া হলো, সেটি আমাকে নিজেকে বড় মানুষ হিসেবে প্রমাণ করতে উদ্বুদ্ধ করবে। আশা করি নিজের ও পরিবারের জন্য একটা বাড়ি বানাতে পারব আমি।’
দুটি ক্যাটাগরিতে বিশ্বের সবচেয়ে খর্বাকৃতির মানুষ উপাধি দিয়ে থাকে গিনেস ওয়ার্ল্ডস রেকর্ডস। একটি হলো, যাঁরা হাঁটাচলা করতে সক্ষম, অন্যটি যাঁরা চলাফেরা করতে অক্ষম। অন্যের সাহায্য ছাড়া নড়াচড়া করতে পারেন না, এমন ক্যাটাগরিতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রকায় ব্যক্তি ফিলিপাইনের জুনরে বালাউইং। তাঁর উচ্চতা ৫৯ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার।
খগেন্দ্র থাপা মাগার অবশ্য বিশ্বের সবচেয়ে খর্বাকৃতির মানুষের উপাধি কিছু সময়ের জন্য হারিয়েছিলেন আরেক স্বদেশির কাছে। নেপালের চন্দ্র বাহাদুর ডাঙ্গি ৫৪ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার উচ্চতা নিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখান। এরপর ২০১৫ সালে চন্দ্র বাহাদুর ডাঙ্গি মারা গেলে আবারও বিশ্বের ক্ষুদ্রতম ব্যক্তির উপাধি ফিরে পান খগেন্দ্র থাপা।
খগেন্দ্র থাপার যখন চৌদ্দ বছর বয়স, তখন দেশ-বিদেশ ঘোরা এক সেলসম্যান সর্বপ্রথম খগেন্দ্রর কম উচ্চতার বিষয়টি সবার নজরে আনেন। খগেন্দ্রকে স্থানীয় একটি মেলায় নিয়ে যান ওই সেলসম্যান। মেলায় ঘুরতে আসা শিশুরা অর্থ দিয়ে খগেন্দ্রর সঙ্গে ছবি তোলে।
২০১০ সালে গিনেস কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি পাওয়ার পর, নানা দেশ ভ্রমণ করেন খগেন্দ্র থাপা। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেলেও তাঁকে দেখানো হয়। নেপালের পর্যটন বিষয়ক প্রচারণার পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন খগেন্দ্র।