চীনজুড়ে করোনার প্রকোপ, বয়স্কদের নিয়ে উদ্বেগ

Looks like you've blocked notifications!
চীনে বয়স্ক রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। ছবি : সংগৃহীত

চীনজুড়ে ফের করোনার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এতে বয়স্কদের নিয়ে বেড়েছে উদ্বেগ। বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলের বয়স্কদের জন্য এই উদ্বেগ আরও বেশি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এদের অধিকাংশই আগে থেকে নানা রোগে ভুগছেন। খবর রয়টার্সের।

চীনের দক্ষিণাঞ্চলের সিচুয়ান প্রদেশের লেঝি কাউন্টির একটি ব্যস্ত গ্রামের ক্লিনিকে উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন ৫৯ বছরের ইয়াং। সেখানে তাঁর স্বামী চিকিৎসা চলছিল।

এক সপ্তাহের বেশি সময় তিনি জ্বর, ঠান্ডা, কাশি ও কোভিডের অন্যান্য উপসর্গে ভুগছিলেন। ইয়াং বলেন, ‘এ মাসে চীনে জিরো কোভিড-নীতি শিথিল করায় দেশটির লাখ লাখ নাগরিকের মধ্যে করোনার নতুন ঢেউ দেখা দিয়েছে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা নেওয়ায় পিছিয়ে থাকায় ও চিকিৎসা উপকরণ কম থাকায় গ্রামীণ বয়জ্যেষ্ঠরা বেশি উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। আগামী মাসে নতুন চন্দ্রবর্ষে লাখ লাখ মানুষ তাদের নিজ শহরে যাবে, এটা আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

ইয়াংয়ের তাঁর নির্মাণশ্রমিক স্বামী জিওংয়ের দিকে বারবার তাকাচ্ছিলেন এবং বলছিলেন, ‘আমি চিন্তিত, আমি ভয় পাচ্ছি। এটা সামান্য অসুস্থতা নয়, যেমনটি অনলাইনে বলা হচ্ছে।’  

চীনের উৎপাদিত ভ্যাকসিনের তিন ডোজ পাওয়া জিয়াং আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, তিনি শিগগির ভালো হয়ে যাবেন। কিন্তু সব কিছু খুলে দেওয়ায় আবারও সংক্রমণের বিষয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। কার্যত আমার নির্মাণ এলাকায় সবাই সংক্রমিত হয়েছে। সব কিছু খুলে দেওয়ার পর ভাইরাসটি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।’

যদিও ইয়াং এবং জিওং গণমাধ্যমকে তাদের পুরো নাম বলতে চাননি।

ছোট্ট ওই সেবাকেন্দ্রে আরও চার রোগী জিওংয়ের পাশে শুয়ে ছিল। তারা কাশছিলেন।

৮০ বছর বয়সী তাং শুনপিং বলেন, ‘এটি সাধারণ সর্দির চেয়ে খারাপ। আমি ঠান্ডা ও ফ্লু-সাপ্লিমেন্ট নিচ্ছিলাম এবং ভালো ছিলাম, কিন্তু এখন সেগুলো আর কাজ করে না।’

ওই কক্ষের অপর প্রান্তে ছিলেন ৮৬ বছর বয়সী চেন লাইফেন। তিনি হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপসহ অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন। চেনের সঙ্গে তাঁর মেয়ে লিয়াও জিয়াওফেং ছিলেন।

লিয়াও জানান, অনলাইনে সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তথ্য জানার পর তাঁর পরিবারের উদ্বেগ ছিল বলে তাঁর বাবাকে টিকা দেওয়া হয়নি।

সিচুয়ান প্রদেশের চেংডু থেকে প্রায় ৯০ মিনিট দূরত্বের এলাকার বেশ কয়েকজন স্থানীয় বলেছেন, যদিও ভাইরাসটি সর্বত্র ছিল, তবে সেটি ‘ফ্লুর মতোই’ ছিল।

লেঝি কাউন্টির কাছাকাছি ছোট শহর ইয়ংকুয়ানের এক চিকিৎসক চেন চ্যাংইং বলেন, চীন এই মাসে প্রায় তিন বছরের কোভিড নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এতে রোগীর সংখ্যা দিনে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে প্রায় ১০০ হয়েছে।

এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘বেশিরভাগ রোগীর একই উপসর্গ রয়েছে, যা কোভিড সংক্রমণের কথা মনে করিয়ে দেয়। রোগীদের অধিকাংশই বয়স্ক।’

চিকিৎসক চেন চ্যাংইং বলেন, ‘আমি অবশ্যই চিন্তিত। অনেক বয়স্কদের অন্যান্য রোগ আছে, যেমন দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কাইটিস। এতে এই ভাইরাস সহজেই ফুসফুসে সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে।’