জর্জ ফ্লয়েডের শহরে এবার কৃষ্ণাঙ্গ তরুণকে গুলি করে হত্যা, ফের বিক্ষোভ
যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে স্থানীয় সময় রোববার পুলিশের গুলিতে দান্তে রাইট নামে ২০ বছর বয়সী এক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ নিহত হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে পুলিশের বিরুদ্ধে শহরটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত বছরের মে মাসে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডকে যেখানে হত্যা করা হয়েছিল, সেখান থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে ওই তরুণকে গুলি করা হয়েছে। ট্রাফিক নিয়ম ভঙ্গ করায় ওই কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের গাড়ি থামিয়েছিল পুলিশ।
কয়েকশ বিক্ষুব্ধ জনতা স্থানীয় সময় রোববার রাতে ব্রুকলিন সেন্টার পুলিশ বিভাগ ভবনের বাইরে জড়ো হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে দাঙ্গা পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে এবং রাসায়নিক দ্রব্যের ধোঁয়ার সৃষ্টি করে।
মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়াল্জ এক বিবৃতিতে জানান, তিনি ব্রুকলিন সেন্টারে বিক্ষোভের খবরাখবর রাখছেন। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আরও একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি নিহতের ঘটনায় অঙ্গরাজ্য শোকাহত।’
মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যসহ অনেক জায়গায় পুলিশ-বিরোধী বিক্ষোভ চলমান রয়েছে। অন্যদিকে, চলছে জর্জ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শাউভিনের বিচার। এর আগে তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ গঠন করা হয়।
নিহত দান্তে রাইটের মা ক্যাটি রাইট ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘রোববার বিকেলে দান্তে তাঁকে ফোন দিয়ে বলেছিল, পুলিশ তাঁর গাড়ি থামিয়েছে। কারণ, দান্তের গাড়ির রিয়ার ভিউ মিরর (পেছনে দেখার আয়না) থেকে এয়ার ফ্রেশনারের ক্যান ঝুলছিল, যা মিনেসোটার আইনে অবৈধ। দান্তে রাইটের মা আরও জানান, তিনি শুনতে পাচ্ছিলেন যে পুলিশ তাঁর ছেলেকে গাড়ি থেকে বের হতে বলছে।’
কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন ক্যাটি রাইট বলেন, “আমি ধস্তাধস্তির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম। পুলিশ কর্মকর্তাদের বলতে শুনেছি, ‘দান্তে, দৌড়িও না।’ এরপর ফোন কেটে গেলে ছেলের নাম্বারে আবার ফোন দেই। ফোন ধরে ছেলের বান্ধবী, জানায় দান্তে বেঁচে নেই, তাঁর মৃতদেহ চালকের আসনে রয়েছে।’
ব্রুকলিন সেন্টার পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করায় রোববার দুপুর ২টার একটু আগে এক ব্যক্তির গাড়ি থামায় পুলিশ। এবং পরে পুলিশ দেখতে পায় ওই ব্যক্তির নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। পুলিশ গ্রেপ্তার করতে চাইলে তিনি গাড়িতে ফিরে যান। পরে একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে গুলি করে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা দুজন পুলিশ কর্মকর্তার শরীরে থাকা ক্যামেরা ফুটেজ দেখা হচ্ছে।
এদিকে, গুলির ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে অঙ্গরাজ্যের ব্যুরো অব ক্রিমিনাল অ্যাপ্রিহেনশন।