জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে টানা উত্তেজনায় দরকষাকষি
মিশরে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৭) একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে বিশ্ব নেতাদের দরকষাকষি যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে না পারায় লোহিত সাগরের রিসোর্ট শার্ম এল শেখে দুই সপ্তাহের এই সম্মেলনের সময় বাড়ানো হয়েছে। আর এক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তার ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিলের জন্য কারা অর্থ দেবে সে বিষয়টিই এখন প্রধান আলোচ্যসূচি হয়ে দেখা দিয়েছে।
সমঝোতাকারীরা বলছে বিষয়টির সুরাহা হয়েছে তবে চূড়ান্ত চুক্তি এখনও স্বাক্ষর হয়নি। এই সম্মেলনে প্রায় দুশ’ দেশের প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।
আয়োজক দেশ মিশর বলছে তারা চায় আজ রাতের মধ্যেই একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে তবে সমঝোতাকারীরা বলছেন তারা বিষয়টিতে ঐকমত্যে পৌঁছাতে আরও একটি দীর্ঘ রাতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জলবায়ু সম্মেলনের সেশনগুলো নিয়মিতভাবেই অতিরিক্ত সময়ে পৌঁছায় আর কপ২৭ হতে যাচ্ছে সম্ভবত সবচেয়ে দীর্ঘ সম্মেলন। শনিবার দিনশেষে রিসোর্ট ভেন্যুর আয়োজন শেষ হবার পরও দরকষাকষি চলছিল এবং কোনো কোনো দেশের প্রতিনিধিরা চলেও গিয়েছিল।
আলোচনায় সমঝোতায় না পৌঁছাতে পারার বিষয়টি হলো ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিলে অর্থ যোগাদাতাদের তালিকা তৈরি প্রসঙ্গে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলো এই তহবিল গঠনে কয়েক যুগ ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল।
যদি কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারে সদস্য দেশগুলো তবে তা হবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি ঐতিহাসিক বিজয়। আর এতে পাকিস্তান ও নাইজেরিয়ার সাম্প্রতিক বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে।
বৃহস্পতিবার রাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানায় তারা কিছু শর্ত সাপেক্ষে এই ক্ষতিপূরণের বিষয়ে রাজী হতে পারে। ইইউ বলে যাদের সামর্থ আছে তারাই এই তহবিলে অর্থের যোগান দিবে। আর এই তালিকায় অপেক্ষাকৃত বড় অর্থনীতির দেশ চীন, সৌদি আরব ও সিঙ্গাপুরকে চায় তারা। তখন জাতিসংঘের উন্নয়নশীল দেশের সংজ্ঞা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে পুরো বিষয়টি।
তবে যাই হোক না কেন বিশ্বের তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রির বেশি বাড়তে না দেওয়ার বিষয়ে যে টার্গেট ছিল তা আবারো তুলে ধরা হয়েছে সম্মেলনে। জাতিসংঘের কথায় এর চেয়ে বেশি যদি পৃথিবীর তাপমাত্র বেড়ে যায় তবে তা আরও কয়েক কোটি মানুষের জীবনে সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে দেখা দেবে।