ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ : নিজের পুরোনো টুইট সামনে আনলেন হিলারি

Looks like you've blocked notifications!
২০১৬ সালে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন (বাঁয়ে) বর্তমান বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে টুইটার অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলতে বলেছিলেন। ফাইল ছবি

সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ২০১৬ সালে তৎকালীন রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশে একটি টুইট করেছিলেন। প্রায় পাঁচ বছর পর, গতকাল শুক্রবার থেকে হিলারির সেই টুইট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে।

সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের প্রতিপক্ষ ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে বছরের জুনে হিলারি ট্রাম্পের উদ্দেশে টুইট করেছিলেন, ‘আপনার অ্যাকাউন্ট মুছে দিন।’ হিলারি তাঁকে উদ্দেশ করে ট্রাম্পের এক ব্যাঙ্গাত্মক টুইটের জবাবে এমন ফিরতি টুইট করেছিলেন। এর আগে ট্রাম্প টুইটে বলেছিলেন, ‘ওবামা (সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা) অসাধু হিলারিকে সমর্থন দিয়েছেন। ওবামা চান আরো চার বছর তাঁর ক্ষমতাকাল থাকুক, কিন্তু অন্য কেউ সেটা চায় না।’  

ট্রাম্পকে টুইটার অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হিলারির ওই টুইট সে সময় ভাইরাল হয়েছিল। এক ঘণ্টায় হিরালির টুইটটি এক লাখ ৩০ হাজারবার রিটুইট হয়। সে সময় সেটি ছিল হিলারির সবচেয়ে বেশিবার রিটুইট হওয়া কোনো পোস্ট।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ খারাপ কোনো কিছু পোস্ট করলে প্রায়ই ‘ডিলিট ইওর অ্যাকাউন্ট’ বা ‘তোমার অ্যাকাউন্ট মুছে ফেল’ কথাটি বলে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

হিলারির ওই টুইটের পর কেটে গেছে প্রায় পাঁচ বছর। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটকে হারিয়ে হোয়াইট হাউসে অভিষিক্ত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর ২০২০ সালে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে দাঁড়ান ট্রাম্প। কিন্তু এবার ডেমোক্রেটিক জো বাইডেনের কাছে হেরে যান। কিন্তু, পরাজয় মেনে নিতে পারছিলেন না ট্রাম্প। গত বছরের ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের পর থেকেই নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন ট্রাম্প। বিষয়টি আদালতেও গড়ায়। কিন্তু, ট্রাম্পের কোনো অভিযোগই ধোপে টেকেনি। এরপর সর্বশেষ চরম ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে গত বুধবার (৬ জানুয়ারি)। ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাজারো উগ্র সমর্থক মার্কিন কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটলে নজিরবিহীন হামলা ও নৈরাজ্য চালায়। ওই ঘটনার পর নিজের হামলাকারী সমর্থকদের ‘দেশপ্রেমিক’ আখ্যা দিয়ে টুইট করার জেরে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ১২ ঘণ্টার জন্য লক করে দেওয়া হয়। এর আগে সংঘর্ষের ঘটনার পরই ট্রাম্পের করা তিনটি টুইট নীতিমালা ভঙ্গ করার অভিযোগ এনে মুছে দিয়েছিল টুইটার কর্তৃপক্ষ। পরে ১২ ঘণ্টা পর ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু তখনই অ্যাকাউন্ট চিরতরে বন্ধ করা হতে পারে বলে টুইটারের পক্ষ থেকে সতর্কতা দেওয়া হয়। অ্যাকাউন্ট ফিরে পেয়ে আবারও ‘উসকানিমূলক’ টুইট করেছেন বলে জানিয়ে টুইটার কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়।

বন্ধ করার কারণ জানিয় টুইটারের পক্ষে থেকে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট (@realDonaldTrump) থেকে দেওয়া সাম্প্রতিক পোস্টগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করার পর অ্যাকাউন্টটি চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবারও সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার আশঙ্কায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানায় টুইটার কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে একটি ব্লগ পোস্ট প্রকাশ করে টুইটার কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার কারণ বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছে।

ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট টুইটার কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার পর আজ (বাংলাদেশ সময়) সকাল ৮টার দিকে ২০১৬ সালের সেই পুরোনো টুইটটি কেবল একটি টিকচিহ্ন দিয়ে রিটুইট করেছেন হিলারি ক্লিনটন। এরপর থেকে আবারও ব্যাপক হারে রিটুইট হচ্ছে হিলারির ওই টুইট।