ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন, অভিশংসনে নিম্নকক্ষে ভোটাভুটির অপেক্ষা

Looks like you've blocked notifications!

দীর্ঘ শুনানির পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের দুটি অভিযোগ সত্য বলে ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বা প্রতিনিধি পরিষদের তদন্ত কমিটি। এর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ট্রাম্পকে অপসারণের প্রস্তাবের ওপর ভোট দেবেন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্যরা। তবে নিজের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ আগে থেকেই অস্বীকার করে আসছেন ট্রাম্প।

গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের হাউস জুডিশিয়ারি কমিটিতে অভিশংসন অভিযোগেরও ওপর ভোট অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ট্রাম্পকে অভিশংসনের পক্ষে ২৩টি ভোট পড়ে। আর বিপক্ষে ভোট দেন ১৭ জন। তদন্ত কমিটির রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট সদস্যরা তাঁদের ভোট দেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে বর্তমানে ট্রাম্পের বিরোধীরা সংখ্যাগুরু। ফলে প্রতিনিধি পরিষদে যদি ট্রাম্পকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট যায়, পরের পর্যায়ে বিষয়টি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে উত্থাপিত হবে। প্রেসিডেন্টকে পদ থেকে অপসারণের জন্য দুই-তৃতীয়াশ সিনেটরের সম্মতি প্রয়োজন হবে।

এর আগে বিশ্লেষকরা বলেছিলেন, প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকায় সেখানে ভোটাভুটিতে ট্রাম্পকে অভিশংসনের পক্ষেই রায় আসবে। তবে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানরা, তাই সেখানে ট্রাম্পই টিকে যাবেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিশংসনে গত নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ ইস্যুর পর আলোচনায় এসেছে ইউক্রেনের জন্য বরাদ্দ থাকা মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিতের বিষয়। এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি দফায় দফায় শুনানি শেষে প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ।

আগামী বছর অনুষ্ঠিতব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেন্সকির ওপর চাপ প্রয়োগ করে অভিশংসন তদন্তের মুখে পড়েন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিষয়টির সত্যতা ও গভীরতা যাচাইয়ে সংশ্লিষ্টদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। পাশাপাশি হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটিতে চলে সপ্তাহব্যাপী শুনানি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জো বাইডেন ও তাঁর ছেলে হান্টারের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে অভিযোগ আরোপ করার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেন্সকির ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। জানা গেছে, ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকিকে বলেন, তিনি যতক্ষণ পর্যন্ত বাইডেন ও তাঁর ছেলের আর্থিক দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত না করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত রাখা হবে। ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ অনেক রাজনীতিবিদ ও কূটনীতিক বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এ নিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্ত চলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করার উদ্যোগ এটাই প্রথম নয়। বিল ক্লিনটন সর্বশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি ১৯৯৮ সালে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। এ ছাড়া অ্যান্ড্রু জনসন প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যাঁর বিরুদ্ধে ১৮৬৮ সালে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ। তবে তাঁদের কাউকেই সিনেট দোষী সাব্যস্ত করেনি।