তাইওয়ান : বেসামরিক যোদ্ধা বাহিনী গড়ে তুলতে কোটিপতির উদ্যোগ সফল হবে?
গত সেপ্টেম্বর মাসের কথা। তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেতে পাকা চুলের আর ভারী ফ্রেমের চশমা পরা প্রযুক্তি ব্যবসা থেকে অবসরপ্রাপ্ত একজন কোটিপতি একটি প্রেস কনফারেন্স ডেকেছিলেন। সেখানে ওই ব্যবসায়ী ঘোষণা দেন যে তিনি দেশে বেসামরিক সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে এক বিলিয়ন তাইওয়ান ডলারের তহবিল কাজে লাগাতে যাচ্ছেন।
একটি বিজনেস শার্টের ওপর বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরা রাবার্ট টুসাও তার বক্তব্যে বলেন যে, তিনি তার দেশের পুরুষ ও নারীদের চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাহায্য করতে চান। তার লক্ষ্য আগামি তিন বছরে মোট জনসংখ্যার সাত ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ ৩০ লাখ বেসামরিক যোদ্ধা তৈরি করা। পাশাপাশি তিন লাখ শার্প শ্যুটার তৈরিতে তিনি চান অফিস কর্মী, শিক্ষার্থী, দোকান কর্মী, অভিভাবকরা যেন বন্দুক কীভাবে ধরতে হয় তা শিখে নেন।
এই কাজটি অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী, তিনি তা বোঝেন। তবে তা করে দেখাতে চান এই কোটিপতি।
রবার্ট টুসাও এ সময় তার সদ্য নেওয়া তাইওয়ানের জাতীয় পরিচয়পত্র সামনে তুলে ধরেন যা তিনি সিঙ্গাপুরের নাগরিত্ব ছেড়ে গ্রহণ করেছেন। তিনি জানান যে, পালিয়ে যাচ্ছেন না তিনি আর এই কাজ করতে গিয়ে ভয়ও পাচ্ছেন না। কয়েক সপ্তাহ আগে বিবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি যতক্ষণ নাগরিকরা তাইওয়ানে আছেন তারা তাদের দেশকে রক্ষায় কাজ করে যাবেন। চীনের সামরিক আগ্রাসনে তারা মোটেও ভীত নয়।’
রবার্ট টুসাও জন্মেছিলেন চীনে তবে বেড়ে ওঠেছিলেন তাইওয়ানে। তিনি গড়ে তুলেছেন ইউনাইটেড মাইক্রোইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন নামে সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি যা এখন শুধুমাত্র দ্বীপদেশটি নয় সারা বিশ্বেই পরিচিত।
ব্যবসায়ী হিসেবে চীনের সঙ্গে রয়েছে তার অনেক কাজ। ইতিহাসের ছাত্র রবার্ট টুসাও গত কয়েক যুগে নীতি নির্ধারণী বিতর্কে একজন সারা জাগানো বক্তা। মূল ভূখন্ডের সঙ্গে একীভূত হতে ২০০৭ সালে গণভোট আয়োজনের ধারণা তার কাছ থেকেই আসে। তবে এখন তিনি সংখ্যায় বাড়তে থাকা তাইওয়ানি নাগরিকদের মতো মনে করেন যে, আগ্রাসন মোকবিলায় এখন তাদের প্রস্তুত হওয়ার সময় এসেছে।
রবার্ট টুসাওয়ের এই উদ্যোগ গত কয়েক যুগে চীনের সামরিক শক্তির দাপটের মধ্যে জীবন ধারণে অভ্যস্ত তাইওয়ানবাসীকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে।