তাজমহলের ভেতরে দেব-দেবীর স্থাপনা নেই, জানাল ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ

Looks like you've blocked notifications!
তাজমহলের ফাইল ছবি

তাজমহলের ভেতরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেব-দেবীর স্থাপনা নিয়ে জল্পনার অবসান ঘটাল ভারতের প্রত্নতত্ত্বীয় বিভাগ-এএসআই। তারা সাফ জানিয়ে দিল—তাজমহলের অন্দরে দেব-দেবীর কোনো স্থাপনা নেই।   তাজমহল শিব মন্দিরের ওপর তৈরি, এমনকি তাজের লুকোনো কোনো এক প্রকোষ্ঠে নাকি বাস করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের আরাধ্য দেবতা মহাদেব। এ নিয়ে বহু বছর ধরে ভারতে বিতর্ক চলে আসছে। সে বিতর্ক নতুন করে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়ে।

এ নিয়ে এক বিজেপিনেতা ভারতের সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি সম্পর্কে  পিটিশন করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন—তাজের অন্তত ২২টি বন্ধ ঘরে দেব-দেবীর মূর্তি রয়েছে। তবে, সম্প্রতি একটি আরটিআই দাখিল করা হয়েছিল বিষয়টি নিয়ে। জানতে চাওয়া হয়—তাজের ভেতরে কোথাও কোনো মূর্তি রয়েছে কি না, কিংবা তাজ কোনো মন্দিরের ওপর তৈরি কি না? মূর্তি ও মন্দিরের প্রশ্নে সরাসরি উত্তর দিল এএসআই। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিল—তাজের মধ্যে এসব কিছুই নেই। আরটিআই-এর জবাবে, ভারতের প্রত্নতত্ত্বীয় বিভাগ বলেছে যে, তাজমহলে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি পাওয়া যায়নি। এটাও স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, মন্দিরের জমিতে তাজ নির্মিত হয়নি।

গত ৭ মে অযোধ্যা বিজেপির মিডিয়া ইনচার্জ ড. রজনীশ সিং আদালতে একটি আবেদন করেছিলেন। যার অধীনে তাজের ২২টি কক্ষ খোলার দাবি জানানো হয়েছিল। তিনি হাজার হাজার হিন্দুর পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, ওই ঘরে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি রয়েছে। পিটিশন দাখিল করে তিনি বলেছিলেন—তাজের রহস্য অবশ্যই বিশ্বের সামনে আসা উচিত। সেবার সুপ্রিম কোর্ট কড়া উত্তর দিয়েছিলেন বিজেপিনেতাকে। বলেছিলেন—ভালো করে পড়াশোনা করে, তারপর এ নিয়ে পিটিশন করতে। এ ছাড়া এএসআই তাজের নিচের অংশের ২০টির মতো ছবি প্রকাশ করে এবং বলে দেয়—এখানে এসব কিচ্ছু নেই।

এর পরেই বিতর্ক শুরু হয়। রজনীশ সিং তদন্তের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে একটি কমিটি গঠনের দাবিও করেছিলেন। এরপর থেকেই তাজমহলের রহস্যময় কক্ষ নিয়ে আলোচনা জোরদার হয়। তবে, ঐতিহাসিকেরা স্পষ্টভাবে বলেছেন—তাজমহলে ধর্মের রঙে ছিটানো উচিত নয়। কারণ, এটি একটি বিশ্বের ঐতিহ্য।

ভারতের আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া এরই মধ্যে তাজের ভেতরে হিন্দু দেব-দেবীর স্থাপনার কথা অস্বীকার করেছে।

তাজের ভূমিতে দেবতার মূর্তি এবং একটি মন্দির রয়েছে বলে এর আগেও হিন্দু সংগঠনগুলো আওয়াজ তুলতে এসেছিল। অবশ্য  তখনও ভারতের প্রত্নতত্ত্বীয় দপ্তর সেখানে মূর্তি থাকার কথা সরাসরি অস্বীকার করেছিল।