তালেবানের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব আফগান সরকারের

Looks like you've blocked notifications!

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে একের পর এক শহর দখলে নিচ্ছে উগ্রপন্থি জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে উগ্রপন্থি জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে দশটি প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিয়েছে। সবশেষ আজ বৃহস্পতিবার দেশটির তৃতীয় বৃহত্তর শহর হেরাতের নিয়ন্ত্রণও চলে গেছে জঙ্গিদের হাতে। এর কিছু আগেই কৌশলগত দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ গজনিরও দখল নেয় সশস্ত্র সংগঠনটি।

ঠিক এমন একটি মুহূর্তেই আফগানিস্তানের আশরাফ ঘানির সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষমতা ভাগাভাগির জন্য তালেবান কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তালেবানদের আগ্রগতি রুখতে এবং যুদ্ধ থামাতে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

অন্যতম মধ্যস্থতাকারী গুলাম ফারুক মাজরো বলেন, ‘আফগানিস্তানের সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তালিবান প্রতিনিধিদের কাছে।’

কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের রাজনৈতিক দপ্তর রয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে তালেবান ও সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনা হয়েছে।

এদিকে গজনি দখলে নেওয়ার খবর দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি আজ জানায়, রাজধানী কাবুল ও কান্দাহার প্রদেশের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী মহাসড়কের মধ্যেই গজনির অবস্থান। দেশটির দক্ষিণে তালেবানদের শক্তিশালী ঘাঁটি রয়েছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, গজনির দখল নেওয়ায় উগ্রপন্থি গোষ্ঠীটির কাবুল অভিমুখে অভিযান শক্তিশালী করতে সক্ষম হবে। গজনি থেকে কাবুলের দূরত্ব মাত্র দেড়শ কিলোমিটার।

গজনির প্রাদেশিক পরিষদের একজন সদস্য বলেন, তালেবান গোষ্ঠী শহরের অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। আফগান সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে শুধু গজনি শহরের উপকণ্ঠের একটি পুলিশ চৌকি।

গত প্রায় দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। জো বাইডেনের সরকার ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এরপর থেকে দ্রুত তালেবানের উত্থান ঘটতে শুরু করে।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা জানিয়েছিলেন, আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের ছয় মাসের মধ্যে তালেবান কাবুল দখল করতে পারে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের বেশির ভাগ জায়গায় শাসন পরিচালনাকারী তালেবানের ক্ষিপ্র গতিতে অগ্রসর হওয়া দেখে আফগান সরকার ও তার মিত্ররা হতবাক হয়েছে।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গতকাল বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ৯০ দিনের মধ্যে তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে নিতে পারে। এর মধ্যেই আজ গজনি ও হেরাতের দখলে নেওয়ার খবর এলো।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তা জানান, তালেবান বর্তমানে আফগানিস্তানের ৬৫ শতাংশ দখলে নিয়ে ফেলেছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত এক মাসের সংঘাতে আফগানিস্তানে এক হাজারের বেশি সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি জানিয়েছে, ১ আগস্ট থেকে অন্তত চার হাজার ৪২ জন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছে।